আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যা: ১৯ বছর ঘাতক স্বামী গ্রেপ্তার

১৯ বছর পর মানিকগঞ্জ সদরের গৃহবধূ জুলেখা বেগম (১৯) হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি স্বামী সিরাজুল ইসলামকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, বুধবার (২২ জুন) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন চর সৈয়দপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।

ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক জানান, সিরাজুল ও জুলেখার ২০০২ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সিরাজুল জুলেখাকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকেন। এর মধ্যে জুলেখা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সিরাজুল তার প্রতিবেশি মোশারফ নামে এক যুবকের সঙ্গে জুলেখার পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে মিথ্যা অভিযোগ তোলে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০০৩ সালে সিরাজুল ব্যাগে থাকা গামছা স্ত্রী জুলেখার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেন। পরে মরদেহ নদীর পাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সিরাজুল।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মামলার কর্মকর্তা তদন্ত শেষে এজাহারনামীয় আসামি ভিকটিমের স্বামী সিরাজুল, ভাসুর রফিকুল, শাশুড়ি রাবেয়া এবং খালু শ্বশুর শামসুলসহ মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করে এবং এজাহারনামীয় বাকি ৩ আসামি, ফাইজ উদ্দিন, তাইজুদ্দিন ও আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে চার্জশিটের ভিত্তিতে আদালত মামলার বিচারকার্য পরিচালনা করেন এবং পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ভিকটিম জুলেখাকে হত্যায় সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে ২০০৫ সালের শেষের দিকে মানিকগঞ্জ জেলার জেলা ও দায়রা জজ মো. মোতাহার হোসেন সিরাজুলকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন এবং অপর ৩ জন আসামি ভাসুর রফিকুল, শাশুড়ি রাবেয়া এবং খালু শ্বশুর শামসুলকে খালাস দেন। ঘটনার পর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সিরাজুল প্রায় ১৯ বছর পলাতক ছিলেন। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

টিআর

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন