এবার কুবির ৪ আবাসিক শিক্ষকের পদত্যাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম উল্লেখ করে এবার চারজন আবাসিক শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান, কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষক অর্ণব বিশ্বাস ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানি হলের আবাসিক শিক্ষক জয় চন্দ্র রাজবংশী।
বুধবার (২০ মার্চ) চার আবাসিক শিক্ষক স্বাক্ষরিত পৃথক পদত্যাগ পত্রে এ তথ্য জানা যায়।
পদত্যাগপত্রে জসিম উদ্দিন লিখেন, বর্তমান প্রশাসনিক বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বঙ্গবন্ধু হলের হাউজ-টিউটর পদে থেকে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করছি। এমতাবস্থায় উপর্যুক্ত কারণ বিবেচনা করে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করছি।
পদত্যাগের বিষয়ে ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান বলেন, প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা। নিয়ম বহির্ভূত বিভিন্ন শর্তারোপ। সিন্ডিকেটের অ্যাজেন্ডা বহির্ভূত অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ডিন নিয়োগ। যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের পদোন্নতি না দিয়ে উল্টো বেআইনি শর্তারোপের প্রতিবাদে আমি শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের হাউজ টিউটর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি। সেই সাথে আমি ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক দেয়া কোনো দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।
অর্ণব বিশ্বাস লিখেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান নানাবিধ অ্যাকাডেমিক সংকটের কোন কার্যকরী সমাধান না করা। নিয়মবহির্ভূত বিভিন্ন শর্তারোপ। যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের পদোন্নতি না দিয়ে উল্টো নীতিমালা বহির্ভূত নানাবিধ শর্তারোপের প্রতিবাদে আমি কাজী নজরুল ইসলাম হলের হাউজ টিউটর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।
জয় চন্দ্র রাজবংশী লিখেন, প্রশাসনের নানাবিধ অব্যবস্থাপনা স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়ম বহির্ভূত বিভিন্ন শর্তারোপ, সিন্ডিকেটের অ্যাজেন্ডা বহির্ভূত অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ডিন নিয়োগ। যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রদান না করে উল্টো বেআইনি শর্তারোপের ও শিক্ষকদের সাথে অন্যায্য আচরণের প্রতিবাদ স্বরূপ আমি নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের হাউজ টিউটর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরি বলেছেন, আমি পদত্যাগপত্রগুলো হাতে পেয়েছি। দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের হেনস্তার ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক মো. কামরুল হাসান। শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও অশিক্ষকসুলভ আচরণের প্রতিবাদে একই দিন হাউস টিউটরের পদ ছাড়েন পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুলছুম আক্তার। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের প্রতি অন্যায্য আচরণের প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টরের পদ ছাড়েন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান। প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগে ৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষের পদ ছাড়েন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে থাকা, না থাকার অর্থ একই উল্লেখ করে গতকাল পদত্যাগ করেন ড. শেখ মকছেদুর রহমান।
এএম/