কুমিরকে বিয়ে করেছেন মেক্সিকোর এক মেয়র!
মানুষের সাথে কুমিরের বিয়ে! শুনেই কেমন শরীর শিউরে উঠছে পাঠক? কিন্তু এমনটাই ঘটেছে মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ ওক্সাকা ছোট শহর সান পেদ্রো হুয়ামেলুলায়। প্রাচীন রীতি রক্ষায় শহরটির মেয়র ভিক্টর হুগো সোসা গেলো বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) একটি মেয়ে কুমিরকে বিয়ে করেছেন। সেদিন স্থানীয় সঙ্গীত ও নৃত্যের তালে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় চমকপ্রদ এ বিয়ে।
আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওক্সাকা উপকূলে স্যান পেড্রো হুয়ামেলুলা নামে জেলেদের ছোট্ট একটি গ্রামে বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী এ বিয়ের।
সেদিন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বধুবেশে সাজানো কুমিরটির নাকে চুমুও খেয়েছেন ভিক্টর। সেসময় অবশ্য সেটির মুখ বাঁধা ছিল। হঠাৎ কুমিরটি যেন কাউকে কামড়ে না দেয়, সেজন্যই নেয়া হয়েছিল এ সতর্কতা।
অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র হলেও আদিবাসী সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ ওক্সাকায় অনেকগুলো জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। অত্যন্ত কঠোরভাবে যারা নিজেদের ভাষা এবং ঐতিহ্য রক্ষা করে আসছে।
ছোট রাজকুমারীর মর্যাদা দেয়া সাত বছর বয়সী এ প্রাণিটিকে ধরিত্রী মাতার অবতার হিসেবে বিবেচনা করছেন স্থানীয়রা। আর তাদের প্রধানের সঙ্গে এ বিয়েকে মনে করছেন মানুষের সঙ্গে স্বর্গীয় সংযোগ।
এ বিষয়ে মেয়র সোসা বলেন, নদীতে যেন অনেক মাছ পাওয়া যায়, সেজন্য প্রকৃতির কাছে আমরা অনেক বৃষ্টি আর খাবার প্রার্থনা করেছি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রামটিতে দীর্ঘ পুরনো রীতির সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে ক্যাথলিক আধ্যাত্মিকতা। এসবের মিশেলে ছোট্ট ওই সরিসৃপ প্রাণিটিকে বিয়ের সাদা পোশাকের সঙ্গে দেয়া হয় বর্ণিল পোশাকের সাজ।
ট্রাম্পেট আর ড্রামের বাদ্যের উৎসবমুখর তালের সঙ্গে স্থানীয় জনতা কুমির কন্যাটিকে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় ঘুরতে গেলে পুরুষরা তাদের মাথার হ্যাট খুলে প্রাণীটিকে বাতাস করতে থাকেন।
এ বিয়ের আয়োজক ধর্মমাতা হিসেবে পরিচিত এলিয়া এডিথ আগুইলার বলেন, এ বিয়ের অনুষ্ঠান আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে এবং আমাকে আমার শেকড় সম্পর্কে গর্বিত করে তুলেছে।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে সম্মানিত বোধ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কনে কী পোশাক পরবে সে বিষয়েও তাকে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয়েছে।
‘এটি খুবই চমৎকার একটি প্রথা,’- হাসিমুখে যোগ করেন তিনি।
এসি