ঈদের আগেও স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারে
ঈদের আগে শেষ শুক্রবারে ফের অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। আবারও দাম বেড়ে গেছে শাক-সবজি ও মাছ এবং পোলাওয়ের চালের। এতে বাজারে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, আগানগর এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দামের এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৭০ টাকা, শিম ৩০-৩৫, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, করলা ৫০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, শসা ৪০-৫০ টাকা ও লতি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, ঝিঙে ১০০ টাকা, সজনে ডাটা ২০০ টাকা, কহি ৪০ টাকা, খিরাই ৩০-৪০ টাকা, গাজর ২৫-৩০ টাকা, টমেটো ৩৫-৪০ টাকা ও পটল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
আমদানির পরে কমেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। এছাড়া আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৪০ টাকায়। আদা আগের বাড়তি দামেই ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কেরানীগঞ্জ আগানগর বাজারের সবজি বিক্রেতা উজ্জ্বল জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে কেজিতে দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা। মূলত ঈদের আগমুহূর্ত হওয়ায় সবজি কম আসছে। তবে ঈদের পরে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে আসবে।
কিছুটা দাম বেড়ে গেছে ঈদপণ্য হিসেবে খ্যাত সেমাইয়ের। বাজারে ২০০ গ্রামের প্রতিপ্যাকেট চিকন সেমাই ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। পাশাপাশি খোলা চিকন সেমাই ৩০ টাকা বেড়ে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকায়।
ঈদের সময় আপ্যায়নে অপরিহার্য মাংসের বাজার এখনো চড়া, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৩০-২৬০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৭০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৫০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।
এদিকে, প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মহসিন নামে এক ক্রেতা বলেন, সরকার দাম বেঁধে দিলেও তার প্রভাব বাজারে নেই। ব্যবসায়ীরা এখন মন্ত্রী-আমলাদের কথার তোয়াক্কা করে না। ফলে তারা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন খেয়াল-খুশিমতো।
এদিকে, ঈদের আরেক প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য পোলাওয়ের চাল এর দাম কিছুটা বেড়ে এখন খোলা চিনিগুড়া ১২৫ থেকে মানভেদে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত চাল ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সাইফুল হক জানান, ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে দাম বেড়েছে ইলিশের।
এছাড়া বাজার ঘুরে দেখা যায় স্থিতিশীল আছে অন্য মাছের দাম, ১৮০-২০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আর প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ থেকে টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা ও ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়।