ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি : যে যেভাবে পারছে, ছুটছে নাড়ির টানে
প্রতিবছরই ঈদকে কেন্দ্র করে দেশের গণপরিবহনগুলো যেন বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠে। ক্ষেত্র বিশেষে ভাড়া বেড়ে যায় দুই থেকে তিনগুণ। আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে এবারও চোখে পড়ছে সেই পুরনো চিত্র। যাত্রীদের অভিযোগ, সাড়ে তিনশ টাকার বাস ভাড়া নেয়া হচ্ছে আটশ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। তাই বাধ্য হয়েই নিম্ন আয়ের মানুষরা নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে বেছে নিচ্ছেন বিকল্প ব্যবস্থা। তাদের অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে ঈদ পালনে বাড়ি ছুটছেন ট্রাক কিংবা কন্টেইনারে।
রাজধানীর উত্তরা, টঙ্গী, গাজীপুর এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মহাখালী থেকে ছেড়ে আসা ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনাগামী বাসগুলোতে কোন সিট ফাঁকা নেই। এরপরও স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও দুই থেকে তিনগুণ যাত্রী নিচ্ছে বাসগুলো। নাড়ির টানে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়া এসব মানুষকে অনেকটা বাধ্য হয়েই গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
তাদেরই একজন জামাল মিয়া, পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে যাবেন শেরপুর। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা ধরে তিনি এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছেন, বাসে পাচ্ছেন না কোন সিট, দাড়িয়ে গেলেও ভাড়া তিনগুণ। অবশেষে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাকে করেই বাড়ি ফিরবেন।
এতো ঝুঁকি নিয়ে কেন ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন? এই প্রশ্ন ছিলো তার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, কোন বাসেই সিট পাচ্ছি না, যাবো শেরপুর। দূরের যাত্রা দাঁড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না। ভাড়াও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। যেখানে আগে যেতাম তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো টাকায়, সেখানে এখন ভাড়া চাচ্ছে এক হাজার টাকা। তুলনামূলকভাবে ট্রাকে করে কম টাকায় যাওয়া যায়। শেরপুর পর্যন্ত ট্রাকগুলোতে ভাড়া নিচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা। ট্রাকে করে এভাবে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কী আর করা। আমাদেরকে বাড়ি যেতে হবে। বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান রেখে তো আর ঈদ করা যায় না।
এমনি আরও একজন ময়মনসিংহের মো. জলিল মিয়া। পেশায় পোশাক শ্রমিক। তিনিও বাড়ি ফিরছেন ট্রাকে করেই। ট্রাকে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাসে দুইশ টাকার ভাড়া এখন পাঁচশ থেকে ছয়শ। কিন্তু ট্রাকে যাচ্ছি দুইশ টাকা করে। আমরা সীমিত আয়ের মানুষ, এ ছাড়া আর কী করার আছে?
মির্জা রুমন