ইরানি ড্রোন ভূপাতিত: সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে জর্ডানিরা
ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলার সময় উত্তর ও মধ্য জর্ডানের ওপর দিয়ে নিক্ষেপ করা কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন ভূপাতিত করে জর্ডানের যুদ্ধবিমানগুলো। এমন পদক্ষেপের জন্য জর্ডানকে নজরে রাখছে ইরান। এমনকি দেশটি (জর্ডান) ‘পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু’ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে তেহরান। এসব ঘটনায় বেশ তোপের মুখে পড়েছে জর্ডান সরকার। এ ঘটনায় দেশটির জনগণও সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ইসরায়েলের ওপর তেহরানের প্রতিশোধমূলক হামলার সময় কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন ভূপাতিত করে জর্ডানের যুদ্ধবিমানগুলো। এ ছাড়া অন্য ড্রোনগুলোকে ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের কাছে আটকে দেওয়া হয়। দেশটির এ ধরনের ভূমিকায় স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জার্মানির গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, জর্ডানের সাধারণ জনগণ বোলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা করে তাদের সরকার বেঈমানি করেছে। এঘটনার মাধ্যমে জর্ডান সরকার ফিলিস্তিনের গাজায় নির্যাতিত মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। জর্ডান সরকারের এহেন আচরণে গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করা জর্ডানের হাজারো প্রতিবাদী মানুষ খুবই মর্মাহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে জর্ডানিরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এর মধ্যে ‘জর্ডানের রাজা ইসরায়েলকে রক্ষা করার জন্য তার নাগরিকদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ফেলেছিলেন’- এমন একটি পোস্ট এক্স-এ ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হচ্ছে।
পোস্টটির সঙ্গে ইসরায়েলের সীমান্ত থেকে সামান্য দূরে জর্ডানের কারাক শহরে ইরানি ড্রোন ধ্বংসাবশেষের একটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে। ওই পোস্টটি ব্যাপকহারে শেয়ারের পাশাপাশি এতে জর্ডান সরকারের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘নিজেদের শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ফেলে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছে জর্ডান।’
ডয়চে ভেলে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হুসেইন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘জর্ডান যেভাবে ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে তাতে আমি খুবই বিরক্ত৷ এখানকার অনেকেই এটা মেনে নিচ্ছে না। আমরা ইরানকে সমর্থন করি না। আর গাজায় যা ঘটছে তারও নিন্দা জানাই। তবে গাজায় হামলা বাধাগ্রস্ত করে এমন যে কোনো পদক্ষেপের সঙ্গে একাত্মতা জানাই।’
মারিয়াম নামে আম্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী বলেন, ‘জর্ডানে ইরানের জনপ্রিয়তা না থাকলেও আমি ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র জর্ডানের বাধা দেওয়া প্রত্যাখ্যান করি।’
এদিকে, ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্র ভূপাতিত করার ব্যাখ্যা দিয়েছে জর্ডান সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ড্রোনগুলো আমাদের জনগণ ও জনবহুল এলাকার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল। তাই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’