জয়তু মানব জনম: ন্যান্সি
দীর্ঘ সময় গানের সঙ্গে আছেন ন্যান্সি। অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদেরকে। গানগুলো দিয়ে শ্রোতাদের ভালোবাসা যেমন পেয়েছেন তেমনি অর্জন করেছেন জাতীয় পর্যায়ের স্বীকৃতিও।
গেল মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে নিজস্ব অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি একটি পোস্ট করেছেন। ১৪ হাজারের বেশি নেটজনতা ন্যান্সির স্ট্যাটাসটিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পাঁচশোরও বেশি মন্তব্যে ভরে গেছে কমেন্টবক্স।
ন্যান্সি লিখেছেন, “যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই বাবা মায়ের কাছ থেকে আফসোসের সুরে শুনে এসেছি আমার গায়ের রং ফর্সা না। আত্মীয় দের কাছ থেকে শুনেছি আমি আমার বড় ভাইয়ের মত দেখতে সুন্দর না। কোলাহল পছন্দ না বলে জেনেছি আমি সামাজিক না। রান্নায় আগ্রহ না থাকায় জেনেছি আমি সংসারি না। বাচ্চাকে কোলে পিঠে চব্বিশ ঘন্টা রাখিনি বলে তকমা পেয়েছি আমি ভালো মা না। মনের কথা চেপে রাখতে শিখিনি বলে শুনেছি আমি মিষ্টভাষী না। রাগ দমন করতে পারিনা বলে শুনেছি আমি ভালোবাসতে জানিনা। বিবাহিত জীবনে অসফল বলে জেনেছি আমি ভালো স্ত্রী না। গান গাওয়া ছাড়া আর কিছু তেমন পারিনা বলেই নাকি আমি কর্মঠ না। সাধারণ চলাফেরার জন্য শুনেছি আমি তারকাদের মত না। তেমন সাজতে পারিনা বলে জেনেছি আমি পরিপাটি না। কথায় কথায় ঠিকঠাক ইংরেজি বলতে পারিনা বলে শুনেছি আমি স্মার্ট না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখিনি বলে আমি অনেকের কাছেই শিক্ষিত না। চার বাচ্চার মা বলেই জেনেছি শখ আহ্লাদ এখন আর আমার জন্য না। উনিশ বছর বয়সে মা হলেও যেহেতু আমি চৌদ্দ বছর বয়সী মেয়ের মা কাজেই এখন আমি বুড়ি ছাড়া আর কিছুই না। শরীরে মেদ জমে যাওয়াতে এখন আর সব পোষাক আমার জন্য না। যেহেতু আমি ন্যান্সি তাই আমার চলা, বলা, ভালো লাগা, দুঃখ পাওয়া, আবেগ, প্রকাশ ভঙ্গি, খাওয়া, পোষাক, বেঁচে থাকা, মরে যাওয়া - এগুলোর কোনোটাই আর আমার মত করে হবেনা।”
২০০৬ সালে ‘হৃদয়ের কথা’ চলচ্চিত্রের গান গেয়ে যাত্রা শুরু হয় তার। ২০০৯ সালে সংগীতার ব্যানারে তার প্রথম অ্যালবাম ‘ভালোবাসা অধরা’ প্রকাশিত হয়। ২০১১ সালের মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘প্রজাপতি’ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে টানা সাতবার তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী (নারী) বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন ন্যান্সি।
এসি