আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় ফেরদৌস আহমেদ পরকীয়া সম্পর্ককে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের জের নিজের পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে লাথি মেরে হত্যা করে । আজ সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা  জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

পরে এ ঘটনায় মালেকা আক্তারের ভগ্নিপতি মো. তোতা মিয়া সাটুরিয়া থানায় গত ২০ জুলাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানায়, ছায়া-তদন্তের এক পর্যায়ে রোববার (২৪ জুলাই) মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন বেগুন টিউরী এলাকা থেকে ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে ফেরদৌস।

মুক্তা ধর বলেন, গত ১৯ জুলাই মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানাধীন বরাইদ ইউনিয়নের গোপালপুর বাজার সংলগ্ন গোপালপুর সাকিনে স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় মালেকা আক্তারকে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়া সিআইডি এ বিষয়ে ছায়া-তদন্ত শুরু করে। ছায়া-তদন্তে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নিজের স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে রোববার মানিকগঞ্জ থেকে ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মুক্তা ধর বলেন, ভিকটিম মালেকা আক্তার ও ফেরদৌস একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই প্রেমের সম্পর্ক থেকে ২০১৪ সালে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। মালেকা-ফেরদৌসের দাম্পত্য জীবনে পাঁচ বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে গত দুই বছর আগে মানিকগঞ্জ সদরে পিংকী নামে এক নারীর সঙ্গে ফেরদৌসের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ বিষয়টি মালেকা জানতে পারলে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, এই কলহের জের ধরে ফেরদৌস সাত মাস আগে মালেকাকে ডিভোর্স দেয়। ডিভোর্সের এক মাস পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় পুনরায় মালেকা আক্তারকে বিয়ে করে সংসার করতে থাকে। ইতোমধ্যে মালেকা আক্তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু ফেরদৌসের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বজায় থাকায় তাদের মধ্যে আবারও দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়।

ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গত ১৯ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় একই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আবারও কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ফেরদৌস অন্তঃসত্ত্বা মালেকার পেটে লাথি, ঘুষি মারলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে ফেরদৌস চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর বাড়ির লোকজন তাদের কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরে গিয়ে মালেকা বেগমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তারা স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে ডেকে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন