আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

প্রবাসীদের ভোটগ্রহণের পদক্ষেপসহ ১৬ প্রস্তাব এনপিপির

দেশের রেমিটেন্স যোদ্ধা-প্রবাসী ভোটারদের ভোটগ্রহণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াসহ সুনির্দিষ্ট ১৬টি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। 

আজ মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসে প্রস্তাবগুলো দেয় এনপিপি। সংলাপে দলটির লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই মণ্ডল।

তিনি বলেন, আপনারা যে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন তা শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জনপ্রত্যাশা পূরণ করবে বলে আমরা মনে করি। আপনারা যেহেতু সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন, তাই আপনাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আমরা চাই সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে ইচ্ছা তাকে দেব’ এ নীতির আলোকে নির্বাচন অনুষ্ঠান আমাদের দাবি।

তাদের সুপারিশগুলো হলো-

১। বিনামূল্যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীদেরকে ভোটার তালিকা সরবরাহ করার প্রস্তাব।

২। দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি দলীয় চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের নিরাপত্তা ও দলীয় কার্যালয়ের নিরাপত্তা দিতে হবে।

৩। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে। তাই রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদেরকে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করছি।

৪। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা নির্বাচন করতে চাইলে কমপক্ষে ৩ বছর যেকোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে যোগ্যতা অর্জনের বিধান করার প্রস্তাব করছি।

৫। স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধে অপরাধী ব্যক্তির দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক, ঋণ খেলাপি, অর্থ পাচারকারী, রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎকারী, ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিতরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে তা নিশ্চিত করা।

৬। দেশের রেমিটেন্স যোদ্ধা-প্রবাসী ভোটারদের ভোটগ্রহণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করছি।

৭। নির্বাচনকালীন সময়ে সব বৈধ অস্ত্র জমা এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করছি।

৮। নির্বাচনে সহিংসতা রোধকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করছি।

৯। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর নতুন কোন রাজনৈতিক মামলা না দেওয়া। কোন প্রার্থী ও তার কর্মীদের অযথা হয়রানি না করা।

১০। ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষ ব্যতীত প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ও বুথে অনিয়ম রোধে সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং তা ভোট কেন্দ্রের বাইরে প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করছি।

১১। নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা উপাশনালয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করণসহ ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করছি।

১২। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে কতগুলো আসনে ভোট হবে-তা এখনই পরিষ্কার করে ওই সব এলাকায় জনসাধারণকে ইভিএম বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে ধারণা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।

১৩। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বল্প সংখ্যক আসনেও যদি ইভিএম ব্যবহার করা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা ‘ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল’ (ভিভিপিএটি) সংযুক্ত করার প্রস্তাব করছি। তাছাড়া ইভিএম যেহেতু মেশিন, তাই কোন অবস্থাতেই যাতে কেউ কোনরূপ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে হ্যাকিং করতে না পারে সে ব্যাপারে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করছি।

১৪। দেশের মানুষকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, এক কথায় জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

১৫। নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী প্রার্থীদের জামানত দশ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব করছি।

১৬। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দল ও সব প্রার্থীদের জন্য বাস্তবিক অর্থেই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ এর কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করছি।


এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন