আন্তর্জাতিক

আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে তাদের উপর হামলাও হয়েছে কোথাও কোথাও। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের উপর হামলাও করেছে ইসরায়েলপন্থীরা। যা পরে সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সময় বুধবার (০১মে) ক্যাম্পাসগুলোতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করেছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার (০২ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লস এঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে কয়েক ডজন পুলিশ রাতভর গাড়ি টহল দেয়। তাদের সঙ্গে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুরু হয়েছিল ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ। পরে তা আমেরিকার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন হচ্ছে।

গেলো মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় প্রায় ৩০০ ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়।

ইউনিভার্সিটি অব কলম্বিয়ার ২২ বছরের শিক্ষার্থী মার্ক টরে বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে এত পুলিশ সদস্য মোতায়েন উচিত হয়নি।’

নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হোসে বলেন, ‘আমাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমাকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত আটকে রেখে বেদম পেটানো হয়েছে।’

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ থেকে পুলিশের হাতে আটক শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন মেডিকেল শিক্ষার্থী ইসাবেল। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি মাথায় গুরুতর আঘাত। কেউ কেউ পুলিশ ক্যাম্পে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। কাউকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে ফেলে দেয়া হয়েছিল।’

কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট মিনুচে শফিক ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশের ঘটনায় এক বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘এই অবস্থায় পৌঁছানোর জন্য আমি দুঃখিত।’

গেলো ছয় মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের এ যুদ্ধে হোয়াইট হাউসের অকুণ্ঠ সমর্থনের বিরুদ্ধে এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করতে শুরু করে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর তা ক্রমশ বিস্তৃত হতে থাকে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, ষাটের দশকের শেষের দিকে ভিয়েতনামে আমেরিকার আগ্রাসনবিরোধী ছাত্র বিক্ষোভের পর সম্ভবত সবচেয়ে বড় ছাত্র আন্দোলন হচ্ছে এবার।

উল্লেখ্য, গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এর পর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন