আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

নড়াইলের অধ্যক্ষ ফুলের মালা নিয়ে কলেজে ফিরলেন

নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার পোস্ট’ ঘিরে লাঞ্ছিত হওয়ার দেড় মাস পর নিজের ক্যাম্পাসে ফিরেছেন। এ সময় তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।

আজ বুধবার (৩ অগাস্ট) দুপুরে কলেজে যোগদানের সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও পুলিশ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কলেজ পরিচালনা পর্যদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গেলো ১৮ জুন কলেজের এক ছাত্রের ফেইসবুকে প্রকাশিত পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠলে এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন এমন খবর রটানো হলে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ বাধে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় কয়েকজন। তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

এই প্রেক্ষাপটে ওই দিনই কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গেলো ২৪ জুলাই এক মাস পাঁচ দিন পর উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পাঠদান শুরুর মধ্য দিয়ে কলেজটি চালু হয়। ঘটনার পর থেকেই নিজের বাড়ির বাইরে ছিলেন অধ্যক্ষ।

আজ ক্যাম্পাসে ফিরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন পর কলেজে যোগদান করে খুব ভালো লাগছে। আমার সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, সেটা আমি ভুলে যেতে চাই। সবার সহযোগিতায় এখন থেকে কলেজের সার্বিক কার্যক্রম চালিয়ে যাব।

আমার দুঃসময়ে যারা পাশে ছিলেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

কলেজে যোগদানের সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও পুলিশ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কলেজ পরিচালনা পর্যদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার, রেজিস্ট্রার মাহমুদ আল হোসেন, আইন বিভাগের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান, কলেজ মনিটারিং ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক রফিকুল আকবর, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস, কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অচিন চক্রবর্ত্তী, সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্বে) মাহমুদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এ মতিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু, বিছালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক।

কলেজের এ ঘটনায় ২৫ জুন মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ এসআই শেখ মোরছালিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন।

নড়াইল সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্ব) মাহমুদুর রহমান জানান, অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতসহ সহিংসতার মামলায় এ পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মির্জাপুর কলেজের চার ছাত্র আছেন। তারা সবাই কারাগারে আছেন।

এদিকে ফেইসবুকে কটূক্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার কলেজ ছাত্র রাহুল রায় দেবও কারাগারে রয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন