এমপি আজীমের খণ্ড-বিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার, বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যপূর্ণ তথ্য
ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. আনোয়ারুল আজীম আনার টানা নয়দিন নিখোঁজ থাকার পর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বুধবার (২২ মে ) রাজ্যের বিধাননগরের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে নিউটাউনের টেকনোসিটি থানার পুলিশ এ মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, এমপির সম্পূর্ণ মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দেহের মূল অংশ ট্রলিতে করে পাচার করা হয়েছে, আর দেহাবশেষ উদ্ধার করা গেছে। মোট ছয়জন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তাদের সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। এমপিকে হত্যার পর পাঁচজন দেশে ফিরে আসে এবং একজন এখনও ভারতেই অবস্থান করছে। তবে বাংলাদেশে ফিরে আসা পাঁচজনের মধ্যে একজন অন্য দেশে পাড়ি দিয়েছে বলেও জানা গেছে। আর ভারতে অবস্থান করা ব্যক্তিকে আটক করতে চেষ্টা করছে দেশটির পুলিশ।
মূলত নিখোঁজের অভিযোগ পাওয়ার পর এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারাই জানান মরদেহ আছে সঞ্জিভা গার্ডেনে। সে খবর দেয়া হয় কলকাতা পুলিশকে। পরে বুধবার এ মরদেহ উদ্ধার করে ভারতের পুলিশ।
ভারতের গণমাধ্যম বলছে, যে ফ্ল্যাট থেকে আনোয়ারুল আজিম আনারের খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তার মালিকও একজন বাংলাদেশি। তিনি ভারতে গিয়ে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে ওই ফ্ল্যাট কিনেছেন। কলকাতার পুলিশ তাকেও খুঁজছে বলে জানানো হয়েছে।
আরও জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর ধরে ভারতে আসা যাওয়া আছে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের। তিনি স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । এছাড়া কলকাতায় তিনি যে গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ছিলেন, তিনিও একজন বাংলাদেশি সেই সঙ্গে তার পারিবারিক বন্ধুও ছিলেন।
এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, নানা অপরাধে এক সময় তার বিরুদ্ধে দুই ডজনের বেশি মামলা ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে তিনি প্রভাব বলয় তৈরি করেন। ধীরে ধীরে মামলার সংখ্যা কমতে থাকে। ২০১৪ সালে প্রথম এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর কালীগঞ্জে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন। চোরাচালানের মধ্য দিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হন।
৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামা অনুযায়ী, এমপি আনোয়ারুল ২০০০ সাল থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ২১টি মামলার আসামি ছিলেন। তবে বিভিন্ন সময়ে ওই সব মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছিলেন আজীম। সীমান্তকেন্দ্রিক মাদক কারবারে জড়িত ছিলেন তিনি।
এক সময় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের ওয়ারেন্টভুক্ত ছিলেন আজীম। হুন্ডি কারবার, চোরাচালান ও পাচারের অভিযোগে ইন্টারপোল তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেছিল।
টিআর/