জাতীয়

৯০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ বুধবার

তৃতীয় দফার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে সোমবার (২৬) মধ্যরাতে । এ ধাপে ১০৯ উপজেলায় বুধবার (২৯) ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে মোট ১৯টি উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। যদিও অবশিষ্ট ৯০ উপজেলার প্রার্থীরা বৈরী পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

তৃতীয় ধাপের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা পূর্ব থেকে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকে। বুধবার তৃতীয় ধাপের ৯০ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সেই হিসাবে সোমবার দিনগত রাত ১২টার পর থেকে প্রার্থীরা কোন ধরনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ ২৮ মে দিনগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ২৯ মে দিনগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ৯০ উপজেলায় তিনদিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে সোমবার মধ্যরাত থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে গঠিত বিভিন্ন টিমের বিষয়ে ইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিজিল্যান্স টিম ও অবজারভেশন টিম, মনিটরিং টিম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন এবং উক্ত টিমসমূহের কার্যক্রম নির্ধারিত তিনদিন পর পর বা ক্ষেত্রমতো তাৎক্ষণিক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা টিমসমূহ কর্তৃক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবগত করানোর জন্য নির্দেশনা দেবেন।

এ ছাড়াও উপজেলা নির্বাচনের সামগ্রিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

১৯ উপজেলার ভোট স্থগিত:

তৃতীয় ধাপের ১০৯টি উপজেলার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের কারণে ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার (২৭) এক সংবাদ সম্মেলনে সচিব এই তথ্য জানান।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, আগামী ২৯ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের ১০৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা ছিল। এ উপলেক্ষে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু, গতকাল সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হেনেছে। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যেসব নির্বাচনি এলাকাগুলোতে জলোচ্ছ্বাসের পানি প্রবেশ করেছে, কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে, কোথাও কোথাও গাছ উপড়ে পড়েছে, কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে, এসব বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন মোট ১৯টি উপজেলার ভোটগ্রহণ আপাতত স্থগিত করেছে।

যেসব উপজেলার ভোট স্থগিত:

ইসি সচিব বলেন, বাগেরহাটের শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা জেলার কয়রা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, পটুয়াখালী সদর, দুমকি, মির্জাগঞ্জ, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ভোলার তজুমদ্দিন, লালমোহন, ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঁঠালিয়া ও বরগুনার বামনা ও পাথরঘাটা এবং রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়েছে।

এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে কি না, এমন প্রশ্নে জাহাংগীর আলম বলেন, আমরা ক্ষয়ক্ষতি ও সংশ্লিস্ট উপজেলার বাস্তব চিত্র পেলে তারপর বলতে পারব। এসব উপজেলায় ভোট করার জন্য কি একেবারে অনুপযোগী, এমন প্রশ্নে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, অনুপযোগী না।

প্রথমত, সেখানে এখনও বৃষ্টি আছে। আর পানি জমে আছে। এই বৃষ্টির পানি যদি একদিনের মধ্যে না কমে যায়, তাহলে সেখানে ভোটার উপস্থিতি ও ভোটের মালামাল পৌঁছানো কষ্টকর হয়ে যাবে বলে মাঠ প্রশাসন থেকে আমাদের জানিয়েছেন। তারাই সুপারিশ করেছেন, এসব ভোট পিছিয়ে দেয়ার জন্য। আপাতত আমরা ভোট স্থগিত করেছি। পরে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত জানাব।

পাঁচ থানার ওসি প্রত্যাহার-কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ, চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ এবং আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জকে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট থানার নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শককে (তদন্ত) ৩১ মে পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়ার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ ছাড়া, পটুয়াখালী জেলার দুমকী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট থানার নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শককে (তদন্ত) দায়িত্ব দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন