পরামর্শ

পেটের ব্যথা হলে কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন? কখন হাসপাতালে যাবেন?

পেটের ব্যথা নানা ধরনের হয়ে থাকে। কিছু ব্যথা আছে যেগুলো হঠাৎ করে শুরু হয় এবং একটু পর ভালো হয়ে যায়। এই ব্যথা খুব তীব্র হয় না। আবার কিছু ব্যথা আছে হঠাৎ করে শুরু হলেও বেশ তীব্র ও কষ্টদায়ক হয়। আর কিছু ব্যথা একবার শুরু হলে সেটা সহজে ভালো হয় না বা বিরতি দিয়ে চলতে থাকে।

পেটব্যথা কী?

যুক্তরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, পেট হল পাঁজর ও শ্রোণির (পেলভিস) মধ্যবর্তী জায়গা। এই জায়গাটা হল আমাদের পাকস্থলী, যকৃত, পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয়, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্রের বাড়ি। এগুলোকে একসাথে পাচনতন্ত্র বলা হয়। এইসব অঙ্গের কোথাও যদি সামান্যতম অস্বস্তিও হয়, তাহলেই আমরা পেটে ব্যথা অনুভব করি।

যদিও, পেটে ব্যথা হলেই আমাদের দেশে ধরে নেয়া হয়, এটা হয়ত আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা। বিষয়টা কিন্তু মোটেও তেমন না। পেটে ব্যথা পাচনতন্ত্রের যে কোনও অঙ্গ থেকে হতে পারে। পেটের কোনও অংশে হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা গুরুতর সমস্যা ডেকে আনতে পারে। চিকিৎসা নেয়া না হলে এটি খারাপ থেকে খারাপতর হতে পারে।

পেটে তীব্র ব্যথা যে কারণে হতে পারে :

১. অ্যাপেনডিসাইটিস

২. গ্যাসট্রাইটিস

৩. কিডনিতে পাথর

৪. ওষুধ সেবন

৫. জীবাণুর আক্রমণ

৬. পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিস বা পিআইডি বা প্রদাহজনিত রোগ

৭. মানসিক চাপ

৮. আলসার

৯. ত্রুটিযুক্ত গর্ভধারণ

কখন চিকিসকের পরামর্শ নেবেন?

পেট ব্যথার সাথে নিচের উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে:

১. পেট ব্যথা যদি দ্রুত বাড়তে থাকে

২. পেট ব্যথা বা ঢেকুর তোলা থামছে না এবং একটু পর পর আবার শুরু হচ্ছে

৩. পেট ব্যথার সাথে খাবার গিলতে সমস্যা হচ্ছে

৪. চেষ্টা না করেও ওজন কমছে

৫. বার বার প্রস্রাব হচ্ছে কিংবা একেবারেই প্রস্রাব হচ্ছে না

৬. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হচ্ছে

৭. মলদ্বার বা মূত্রনালী থেকে রক্তপাত হচ্ছে বা অস্বাভাবিকভাবে অন্য কোনও তরল নির্গত হচ্ছে

৮. ডায়রিয়া হওয়ার কয়েক দিন পরও তা ভালো হচ্ছে না

কখন জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যাবেন?

যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য বলছে, পেট ব্যথার সাথে যদি নিচের লক্ষণগুলোও থাকে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যেতে হবে:

১. হঠাৎ করে পেট ব্যথা শুরু হওয়ার পর সেটা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে

২. পেটে স্পর্শ করলেই ব্যথা অনুভব হলে

৩. রক্ত বমি শুরু হলে বা বমির রঙ কফির মতো হলে

৪. মলের সাথে রক্ত পড়লে বা মলের রঙ কালো, আঠালো ও তীব্র দুর্গন্ধ হলে

৫. প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে

৬. মলত্যাগ বা বায়ু নির্গমন বন্ধ হয়ে গেলে

৭. নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসলে বা শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হলে

৮. বুকের ব্যথা শুরু হলে

৯. ডায়াবেটিস থাকলে এবং বমি শুরু হলে

১০. অজ্ঞান হয়ে গেলে

জেএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন