ফুটবল

কৃষ্ণার চিকিৎসায় অবহেলা, বাফুফের দিকে অভিযোগের তীর

বেশ অনেকদিন ধরে চোটে আছেন কৃষ্ণা রানী সরকার। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য তিনি। অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার বলা হয়ে থাকে। তবে তার চোট নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) খুব একটা নজর দিচ্ছে না। এমন এক অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) লিখেছেন কৃষ্ণা রানী।

মেয়েদের প্রিমিয়ার লিগে নাসরিন স্পোর্টস একাডেমির অংশ ছিলেন কৃষ্ণা। এই ক্লাবটি এবার শিরোপা জিতেছে। চীনা তাইপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ দলেও ছিলেন না কৃষ্ণা। এর কারণ হিসেবে তার চোটকেই সামনে রাখা যায়।

কৃষ্ণার চিকিৎসা ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, বাফুফে এ বিষয়ে তৎপর কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফেসবুকে দেওয়া তার স্ট্যাটাস বলছে, সে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা বললেও, বাফুফে সে ব্যাপারে কর্ণপাত করেনি। যদিও বোর্ডের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার জানিয়েছেন, কৃষ্ণার এই অভিযোগ সত্যি নয়।

কৃষ্ণা তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগের থেকে ভালো, কিন্তু এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফের ফিজিও দিয়ে আমার চিকিৎসা চলছে। সবাই জানে ইনজুরিটা অনেক জটিল। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেক দিন দেখেন, যখন ব্যথা কমছিল না। স্যার বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া-ভারত গিয়ে চিকিৎসা করাতে। কিন্তু যখন আমি বাফুফেকে জানাই, তারা বলেছিল আর কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেক দিন তাদের বলেছি ভারতে যাওয়ার কথা। কিন্তু ওনারা আমার কথায় কোনো গুরুত্ব দেননি। আজ পর্যন্ত ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।’

‘২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পাই এবং ২০১৪ সালে সিনিয়র জাতীয় দলে সুযোগ পাই, সেখান থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কখনো কোনো দলের বাইরে থাকতে হয়নি। প্রায় ১০ বছর একটানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি। টুকটাক ইনজুরিতে পড়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে এত বড় ইনজুরিতে পড়ব, কখনো ভাবিনি। অনেক দিন রেস্টে থাকার পর আর ভালো লাগছিল না এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। তাই ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি। চীনে যখন এশিয়ান গেমস খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ বেঞ্চে বসে কাটিয়েছি। ব্যাক টু ব্যাক দুটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক। কষ্ট একটাই, কখনো কোনো টিমমেট, প্লেয়ার বা কোচকে বলতে শুনলাম না কৃষ্ণা ইনজুরিতে, তাকে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করানো হোক। কারও কোনো মাথাব্যথাই নেই। ১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমেষে শেষ। অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশি দিন নেই কৃষ্ণার জন্য। সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ এবং দোয়া করবেন। যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ি। আবার আগের মতো মাঠে ফিরতে পারি।’

শেষে বিশেষ দ্রষ্টব্য উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, 'মনের কিছু কথা শেয়ার করলাম। কারো কোন খারাপ লাগে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।'

বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান ইঙ্গিত দিয়েছেন, কৃষ্ণা এমন কথা ফেসবুকে লিখে অন্যায় করেছে। ফলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

 

এম/এইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন