আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

থানা হেফাজতে আসামির মৃত্যু,আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া মরদেহ নিবে না পরিবার

রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে এক আসামির। আইন প্রক্রিয়া ছাড়া সুমন শেখ নামের ঐ আসামির মরদেহ নিবে না তার পরিবার। 

আজ রোববার (২১ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুমন শেখের আত্মীয় মো. সোহেল আহমেদ। তিনি বলেন, গেলো শনিবার (২০ আগস্ট) রাতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সুমনের মরদেহ চুপিচুপি নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ আমাদের জানিয়েছিল। কিন্তু আমরা তা গ্রহণ করেনি। আজ সকালে সুমনের স্ত্রী আদালতে গেছেন আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে যে, এ ক্ষেত্রে পরিবারের পক্ষ থেকে কি কি আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা যেতে পারে। এছাড়া তিনি জানার চেষ্টা করবেন, পরিবার যদি এভাবে মরদেহ গ্রহণ করে তাহলে সুমন শেখের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যাবে কি না।

সোহেল আরও বলেন, সুমনের স্ত্রীকে যদি আইনজীবীরা পরামর্শ দেন মামলা করার জন্য, তাহলে তিনি করবেন। এক্ষেত্রে ইউনিলিভার লিমিটেড বাংলাদেশ ও পুলিশের বিরুদ্ধে একটি মামলা করতে পারেন। আদালতে মামলা করার পরই আজ বিকেলের দিকে হয়ত সুমনের মরদেহ দাফনের জন্য গ্রহণ করা হতে পারে।

এ বিষয়ে রোববার সকালে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, মরদহের ময়নাতদন্ত শেষ হলে আমরা পরিবারের লোকজনকে ডাকব। তারা মরদেহ শনাক্ত করে নিয়ে যাবে। এছাড়া এখানে আর কোনো আইনি প্রক্রিয়া নেই।

সুমনের শেখের আত্মহত্যার বর্ণনা দিয়ে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, অভিযান শেষে সুমন শেখকে রাতে হাতিরঝিল থানা রাখা হয়। গেলো শনিবার সকালে রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে হাজির করার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ৩২ মিনিটে সুমন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে গলায় ফাঁস দেন। যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এ ফুটেজ নিহতের স্ত্রীসহ স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে।

এদিকে সুমনের মৃত্যুর বিষয়ে ৩ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ। শনিবার রাতে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আজিমুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তখন তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, হাতিরঝিল থানায় সুমন শেখ নামে এক আসামির আত্মহত্যার ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে দায়িত্ব থাকা ডিউটি অফিসার হেমায়েত হোসেন ও সেন্ট্রি মো. জাকারিয়াকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আজিমুল হক বলেন, ইউনিলিভার লিমিটেডের পিউরইটে চাকরি করতেন সুমন শেখ। পিউরইট অফিসের ৫৩ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় গত ১৫ আগস্ট একটি মামলা হয়। এ ঘটনায় ৩ জনকের গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। গ্রেপ্তাররা হলেন- আল আমিন, সোহেল রানা ও অনিক হোসেন। পরে এই ৩ জনের দেওয়া তথ্য ও অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চুরির সঙ্গে সুমন শেখের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। পরে তাকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সুমন শেখকে নিয়ে রাতে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৭শ টাকা জব্দ করা হয়।

এসি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন