আর্কাইভ থেকে এশিয়া

চীন ও তাইওয়ানে আনারস যুদ্ধ

অনেক পুরনো চীন ও তাইওয়ানের দ্বন্দ্ব। এখন নতুন পদক্ষেপ। গেল মাসে তাইওয়ানের আনারস আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় চীন। চীনের দাবি, তাইওয়ানের আনারসে এক ধরনের ‌ক্ষতিকর পোকার ঝুঁকি আছে যা তাদের নিজস্ব ফসলের উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। চীনের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তাইওয়ান।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, তাইওয়াওনের নেতারা বলেছে, এর সঙ্গে ফসলের পোকার কোনো যোগসূত্র নেই। তারা মনে করে, আমদানি নিষিদ্ধের সঙ্গে বাগের কোনো সম্পর্ক নেই বরং তাইওয়ানের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়াতেই এটা করেছে চীন।

তাইওয়ানকে সব সময় নিজেদের একটি প্রদেশ বিবেচনা করে চীন। তাই নতুন বাণিজ্যিক লড়াইয়ের মাধ্যমে সেখানে রাজনৈতিক চাপ বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এজন্য আনারস রপ্তানির জন্য নতুন ক্রেতা খুঁজতে শুরু করেছে ক্ষুব্ধ তাইওয়ানের নেতারা। চীন কর্তৃক নিষিদ্ধ এ ফল খেতে স্থানীয়দেরও বেশি করে উদ্বুদ্ধ করছে তারা। চীনের এই বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে ফেসবুক, টুইটারে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত।

এক টুইট বার্তায় তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে লিখেছেন, তাইওয়ানের আনারস যুদ্ধবিমানের চেয়ে শক্তিশালী। তাদের স্বাদ কমাতে পারবে না ভূ-রাজনৈতিক চাপ।

দেশের ভেতরেই বিক্রি বাড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পাইনঅ্যাপল চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আনারস চ্যালেঞ্জ চালু করেছেন তিনি। এর লক্ষ্য একে অপরকে যেন এখন আরো বেশি আনারস কিনে দেয় তাইওয়ানের জনগণ।

মন্ত্রণালয়ের টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে সমমনা শুভাকাঙ্ক্ষীদের তাইওয়ানের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ। হ্যাশট্যাগ ফ্রিডমপাইন্যাপে যোগ দিতে অনুরোধ করেন তিনি।

এতে সমর্থন দিয়েছে তাইওয়ানে কার্যকর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দূতাবাস। ফেসবুকে তাইওয়ানের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে মার্কিন ইনস্টিটিউটগুলো। মার্কিন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন নিজের ডেস্কে তিনটি আনারস রেখে একটি ছবি তুলে পোস্ট করেন ফেসবুকে। তাইপেতে একই ধরনের কাজ করছে কানাডার বিভিন্ন অফিসও। এক পোস্টে বলা হয়, কানাডার অফিস পিৎজাতে আমরা আনারস খুব পছন্দ করি, বিশেষ করে তাইওয়ানের আনারস!

তাইওয়ানের কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দ্বীপটিতে বছরে প্রায় চার লাখ ২০ হাজার টন আনারস উৎপাদিত হয়। এর ১০ ভাগের কিছু বেশি গেল বছর রপ্তানি করা হয়, যার পুরোটাই যায় চীনে। দেশটি আমদানি বন্ধ করায় আনারস মজুত হয়ে রয়েছে। দাম ব্যাপকভাবে কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন