আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়েই জনগণের সেবা করে যাব : প্রধানমন্ত্রী

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে বড় বড় দেশগুলো সংকটের মধ্যে পড়েছে। সেখানে আমাদের অবস্থা আরও করুণ। তারপরও আমাদের যে সীমিত সম্পদ আছে তাই দিয়ে আমরা জনগণের সেবা করে যাব। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার(২২ আগস্ট) বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ৭৩ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার পর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ এবং একে ঘিরে স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশনে দেশের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কাজেই সেই কষ্ট কতটুকু আমরা লাঘব করতে পারি, আমাদের সকলের সেই প্রচেষ্টাটাই থাকবে।

সরকার প্রধান বলেন, আজকে উন্নত দেশগুলোও হিমসিম খাচ্ছে, তারপরেও আমাদের যেটুকু সামর্থ ও শক্তি আছে- তা দিয়ে জনগণের সেবা আমরা করে যাব। এই কথাটা মনে করেই আপনাদের চলতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই দেশটা আমাদের এই চিন্তা চেতনা যদি নিজের অন্তরে ধারণ করা যায়, তাহলেই আমাদের এ দেশ এগিয়ে যাবে এবং অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।

শেখ হাসিনা  বলেন, আমি চাই তরুণ অফিসাররা তাদের মনন ও বুদ্ধিমত্তাকে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করবে। তারা দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতেও বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশ ব-দ্বীপ অঞ্চলের একেক জায়গার সমস্যা একেক রকম। সেগুলো নিরূপন করে সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। উন্নয়নটা সবসময় যাতে টেকসই হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দরিদ্র থাক সেটা আমি চাইনা। সরকার দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছে।

সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবের এই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ তাঁর মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে, সেটাই আমি চাই এবং দেশে কোন ভূমিহীন বা গৃহহীন যেন না থাকে। কোন এলাকায় গৃহহীণ বা ভূমিহীন ব্যক্তি সরকারের গৃহ নির্মাণ করে দেয়ার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে কিনা তা খুঁজে বের করুন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে শুধু গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছি তাই নয়, তাদের জীবন-জীবিকারও ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। কাজেই আমি চাই আপনারা যারা নতুন হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হবেন তারাও এই বিষয়টির প্রতি খেয়াল রাখবেন। দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব সেভাবেই আপনারা কাজ করে যাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একটা কাজ করেছি যেটা পৃথিবীতে বিরল, যেটা হয়ত আর কেউ করেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান হওয়ার পর থেকে যখন তিনি ভাষা আন্দোলন শুরু করে। তখন থেকেই পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট লেখা শুরু করে। সেই রিপোর্টগুলো আমাদের পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) কাছে ছিল। সেগুলো আমি সংগ্রহ করি, সেখানে প্রায় ৪৫ হাজার পেপারর্স ছিল। সেগুলোর আমরা পাঠ উদ্ধার করি এবং প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেই। ২০ বছর ধরে কাজ করে ইতোমধ্যে ১১ খণ্ড বের করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাই দেশের মানুষ উন্নত জীবন পাবে, সুন্দর জীবনের অধিকারি হোক এবং সে লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন এই অঞ্চলের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট তাঁকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর আবারও সেই বৈষম্য ফিরে আসে। সেখান থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

৬ মাস ব্যাপী এবারের কোর্সে মোট ৪৬১ জন অংশগ্রহণ করেন। যারমধ্যে ১১৯ জন মহিলা।

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আলী আজম বক্তৃতা করেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন