প্রকাশ্যে মাথায় গুলি করে শিক্ষার্থী হত্যাকারী ফারাবী গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলোচিত কলেজছাত্র আশরাফুর রহমান ইজাজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা হাসান আল ফারাবী জয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৮ জুন) সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ফারাবী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ও বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, বুধবার (৫ জুন) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণকালে একটি মিশনারি স্কুলের ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জালাল হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে আশরাফুর রহমান ইজাজের বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে ইজাজকে ভোটারের লাইন থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন জালাল। এ নিয়ে আশরাফুল রহমান ইজাজ প্রতিবাদ করেন। এ সময় খোকাসহ তার সঙ্গে থাকা সহযোগীরা ইজাজকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহদাৎ হোসেন শোভন আনারস প্রতীক নিয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। এ সময় কলেজ পাড়া থেকে শাহদাৎ হোসেন শোভনের সমর্থনে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়। মিছিলে শিক্ষার্থী আশরাফুর রহমান ইজাজও ছিলেন। তবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছাত্রলীগ নেতা আল ফারাবী জয় তার মাথায় পরপর দুটি গুলি করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান ইজাজ।
কে এই ফারাবী?
জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামের ছেলে ফারাবী বাবা-মায়ের চাকরির সুবাধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজপাড়ায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন।
অস্ত্রধারী ফারাবী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে বোটানি বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তার বাবা রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। মা রোকেয়া বেগমও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। বোন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান বর্ষের শিক্ষার্থী।
সহপাঠীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ছাত্রজীবনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল এবং সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের হাত ধরেই রাজনীতিতে ঢোকেন তিনি। যে কোনো মিছিল, মিটিং আন্দোলন সংগ্রামে হাসান আল ফারাবী জয় সক্রিয় ছিলেন। ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কারণেই পেয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজপাড়া এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ফারাবী। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে ওঠা হাসান আল আল ফারাবীর ভয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসীও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় ফারাবীর বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি মামলা।