আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

জামিন বাতিলের আবেদন শুনানির জন্য আজই উপস্থাপন

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। কিন্তু বিচারিত আদালতে পাওয়া তার জামিন বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছে দুদক।

আজ রোববার (২৮ আগস্ট) সেই আবেদন বিষয়ে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে ,জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

গণমাধ্যমকে তিনি জানান, জামিন বাতিলের বিষয়টি আজই হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়, জানান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গেলো ২২ আগস্ট অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় জামিন পান ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তাকে জামিনের আদেশ দেন। অসুস্থতার কারণে তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন আদালত। এরপর তিনি গেলো ২৬ আগস্ট মুক্তি পান।

সম্রাটের জামিন শর্তে আদালত বলেছেন, তার পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। আদালতের অনুমতি না নিয়ে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

গেলো শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে জামিনে মুক্তি পেয়ে বিকেল ৪টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সম্রাট গণমাধ্যমে বলেন, রাজনীতি নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই, আমি সবসময় শেখ হাসিনার কর্মী ছিলাম, কর্মী হিসেবেই কাজ করে যাবো। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতির পদ থেকে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানা নেই ,জানিয়েছেন সম্রাট সম্রাট।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এরপর গেলো ২২ মার্চ তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। একই সঙ্গে অভিযোগ গঠনের দিন ঠিক করে মামলাটি এ আদালতে বদলির আদেশ দেন।

ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ওইদিনই দুপুরে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্ব একটি দল কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে। এদিন নিজ কার্যালয়ে পশুর চামড়া রাখার দায়ে তার ছয় মাসের জেল দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এরপর সম্রাটকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে রমনা থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গেলো ১১ এপ্রিল জামিন পান সম্রাট। এর একদিন আগেই ১০ এপ্রিল অর্থপাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুটি মামলায় ঢাকার পৃথক আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এসি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন