বেনজীরের জমি জিম্মায় নিলো বান্দরবান জেলা প্রশাসন
পুলিশের আলোচিত সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ক্ষমতায় থাকাকালে প্রভাব খাটিয়ে বান্দরবানে জমি ক্রয় করার পাশাপাশি দখল করে নিয়েছেন অনেক দরিদ্র পরিবারের জমিও। এবার এসব জমিও জিম্মায় নিয়েছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে জেলার সুয়ালক ইউনিয়নে স্ত্রী, কন্যা ও নিজের নামে কেনা ২৫ একর জমি জিম্মায় নেয়া হয়।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, বান্দরবানে বেনজীরের অবৈধ জায়গা জমি নিয়ে তদন্ত করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি জিম্মায় নেয়া জমি দেখভালের জন্য একটি রিসিভার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ক্ষমতায় থাকাকালে প্রভাব খাটিয়ে জমি ক্রয় করার পাশাপাশি দখল করে নিয়েছেন অনেক দরিদ্র পরিবারের জমিও। এসব জমিতে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের বাগান, মাছের ঘের, গরুর খামারসহ আলিশান বাগান বাড়ি। দুদকের অভিযানের পর বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য।
সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের মাঝের পাড়া এলাকায় স্ত্রী জীশান মির্জা, মেয়ে ফারহিন রিশতা ও নিজ নামে বেনজীর কিনেছেন ২৫ একর জমি। সে জমির ওপর গড়ে তুলেছেন মৎস্য ঘের, গরুর খামারসহ আলিশান বাগান বাড়ি। যাতায়াতের জন্য করা হয়েছে রাস্তা। আশপাশে কোনো জনবসতি না থাকলেও বেনজীরের জায়গায় দেখা যায় বিদ্যুতের সংযোগ। আর অবকাশ যাপনের জন্য করা হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোতলা বাড়ি। শুধু তাই নয়, জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি মৌজায় বেনজীর কিনেছেন ২৫ একরের ৪টি লিজ করা পাহাড়ি প্লট।
স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া পার্বত্য এলাকায় অন্য কারও জমি কেনার বিধান না থাকায় শুধুমাত্র নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করেছেন এসব জায়গা। রেজিস্ট্রি না করায় প্রশাসনের কাছে নেই সেসব জায়গার কোনো দলিল। আর নিজে দেখাশোনা করতে না পারায় জমি ক্রয় করার পর মংওয়াইচিং নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দেয়া হয় এসব জায়গা দেখাশোনা করার জন্য। তার মাধ্যমে সেখানে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বাগান। স্থানীয়দের অভিযোগ, নামমাত্র মূল্যে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বেনজীর দখলে নিয়েছেন এসব জায়গা।
এ বিষয়ে সুয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা বলেন, বান্দরবানে বিভিন্ন এলাকায় বেনজীরের নামে অনেক সম্পত্তি আছে। আমার ইউনিয়নেও বেনজীরের সম্পত্তি আছে। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে র্যাবের মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নামে-বেনামে বান্দরবানে জায়গা কিনেছেন বেনজীর আহমেদ।
এসি//