জাতীয়

জুনে সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ৮০১ জন

বিদায়ী জুন মাসে ৫৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮০১ জন ও আহত হয়েছেন ৩ হাজার ২৬৭ জন। জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংগঠনটি বলেছে, ওই মাসে রেলপথে ৪৬টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৯টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৭ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬১২টি দুর্ঘটনায় ৮৫৫ জন নিহত এবং ৩ হাজার ২৮৩ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ২১৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২২ জন নিহত ও এক হাজার ৯৩ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১০ জুলাই) সংবাদ মাধ্যমে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। সংগঠনটি দেশের গণমাধ্যম ও পঙ্গু হাসপাতালে তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী জুন মাসে সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যমতে ৫৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৪ জন নিহত এক হাজার ১২৮ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী ওই মাসে ২ হাজার ১৩৯ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগী ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাত বা পা ভেঙে ভর্তি রোগী ৯২২ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর ১৫ শতাংশ হাসপাতালে অথবা বাসায় চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। সেই হিসেবে বিদায়ী জনু মাসে ৮০১ জন নিহত ও ৩ হাজার ২৬৭ জন আহত হয়েছেন। দেশে প্রায় ৯ হাজার সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত হয়ে কতজন রোগী ভর্তি হয়েছে তা বিআরটিএ কে জানাতে হবে।

প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে।

অন্যদিকে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা এবং মেয়াদোর্ত্তীণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেয়াকে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন