অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের প্রস্তাব
সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমন্বয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এসময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ৫ দফা রূপরেখা তুলে ধরেন সংগঠনটি।
রোববার (৪ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের রূপরেখা প্রস্তাব’ শীর্ষক আয়োজনে এ প্রস্তাব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
এসময়ে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষকরা বলেন, “আমরা একটা ভয়ংকর সময় পার করছি। একই সঙ্গে আমরা একটা অসাধারণ সৃষ্টিশীল সম্ভাবনাময় সময়ও পার করছি। আমরা ভয়ংকর দমন-পীড়ন দেখছি, আমরা অসাধারণ প্রতিরোধও দেখছি। গণঅভ্যুত্থান আমরা অনেক দেখেছি। কিন্তু মাত্র ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে এত প্রাণহানি বাংলাদেশ আর কখনো দেখেনি”।
সংগঠনটির পক্ষে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ রূপান্তরের রূপরেখার ৫ দফা প্রস্তাবে বলেন, অবিলম্বে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর সম্মতিক্রমে, নাগরিক ও রাজনৈতিক শক্তিসমূহের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষক, বিচারপতি, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের অংশীজনদের নিয়ে একটি জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-শ্রেণির অন্তর্ভুক্তিমূলক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। এই সরকারের সদস্য নির্বাচনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন। এই সরকারের কাছে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করবে।
তিনি বলেন, এটি প্রাথমিক প্রস্তাব। এ প্রস্তাবকে আরও বিস্তৃত করতে কাজ করবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
রূপান্তরের প্রস্তাবে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর অংশীজনদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে সর্বদলীয় নাগরিকদের নেতৃত্বে একটি ছায়া সরকার গঠিত হবে। তারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, যেন দেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয়। এ ধরনের ছায়া সরকার নির্বাচিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও অব্যাহত থাকতে পারে।
এ রুপরেখায় আরও বলা হয়, সরকার গঠনের ৬ মাসের মধ্যে একটি সংবিধান সভা (কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলি) গঠনের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। নির্বাচিত সংবিধান সভা এমন এক গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রস্তাব করবে যে সংবিধানে স্বৈরতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক, জনবিদ্বেষী ও বৈষম্যমূলক কোনো ধারা থাকবে না। সেই সংবিধানের ভিত্তিতে সরকার অবিলম্বে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করা।
প্রসঙ্গত, আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী, অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ও মোশাহিদা সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আই/এ