বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চলে গেলেন না ফেরার দেশে
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (৮০) মারা গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে কলকাতার পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে তিনি মারা যান। বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর ছেলে সুচেতন ভট্টাচার্য।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য গত ৩ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন । আজ সকালে জ্বর বাড়লে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু এর আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
কয়েক মাস আগেই মারাত্মক শারীরিক সমস্যায় ভুগেছিলেন তিনি। শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। এছাড়াও ছিল নানাবিধ বার্ধক্যজনিত সমস্যা। গত কয়েক বছর ধরে বাড়িতে নিয়মিত চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি। গত বছর আগস্টে ১২ দিন পর হাসপাতালে থাকার পরে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফিরেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই থেকে বাড়িতেই বাইপ্যাপ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে লাগানো ছিল রাইলস টিউবও।
উল্লেখ্য, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ২০০০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তারপর কিছুদিন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও এক যুগেরও বেশি সময় আগে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছিলেন তিনি।
১৯৪৪ সালের ১ মার্চে জন্ম গ্রহণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পাঁচ দশকের বর্ণময় রাজনীতিতে উজ্জ্বল নাম বুদ্ধদেবের। দীর্ঘদিন ধরে পলিটব্যুরো সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭২ সালে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। ১৯৭৭ সালে কাশীপুর-বেলগাছিয়া কেন্দ্রে প্রথম বার বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৬ সালে রাজ্যে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব। ১৯৯৯ সালে উপমুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। ২০০০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে পরাজয়ের পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে ক্রমশই দূরে সরে যেতে থাকেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
দলীয় কর্মসূচিতে শেষবার ব্রিগেড জনসমাবেশে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। তবে তখনও তিনি বেশ অসুস্থ ছিলেন। সভামঞ্চের নীচে গাড়িতে মিনিট পনেরো বসে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জে পাম অ্যাভিনিউয়ে আড়ম্বরহীন জীবন কাটিয়েছেন বুদ্ধদেব।
জেডএস/