সীমান্তে আবারও রোহিঙ্গাদের ভিড়
মিয়ানমারের মংডু সীমান্তে কমপক্ষে ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষা করছে। গেলো সপ্তাহে রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ ড্রোন হামলার জেরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বেশ কিছু লাশ নাফ নদী ধরে বাংলাদেশে ভেসে এসেছে। টেকনাফের একজন এনজিও কর্মী বাংলাদেশে বেশ কিছু লাশ দাফনের দাবি করেছেন৷ একজন রোহিঙ্গা বলেছেন, ড্রোন হামলায় মংডু এলাকায় তার ৯ জন আত্মীয় নিহত হয়েছেন। আর আহত চারজন বাংলাদেশে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে, বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা ও টহল বাড়িয়েছে বিজিবি৷ অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে৷
গেলো সপ্তাহে বাংলাদেশের দিকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের মংডুতে ড্রোন হামলা চালানো হয়। গুলিও করা হয়। এতে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হয়। আরাকান আর্মি এই হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম এখন পর্যন্ত অর্ধশত লাশ বাংলাদেশে ভেসে আসার খবর দিয়েছে। তবে টেকনাফ এলাকার এনজিও কর্মী মাহবুব আলম মিনার বলেছেন, আমার তত্ত্বাবধানেই ১৭০ জন রোহিঙ্গার লাশ আমরা এখানে দাফন করেছি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাফন করা হয়েছে শাহপরীর দ্বীপে বড় মাদ্রাসা মসজিদের কবরস্থানে, সেখানে ৫৫টি লাশ দাফন করা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, আমি যে তথ্য পেয়েছি তাতে টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তের ওই পাড়ে কমপক্ষে সাত থেকে ১০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে।
টেকনাফ এলাকার এক ক্যাম্পের বাসিন্দা বলেন, আমার জানা মতে সীমান্তের ওপারে ২০-৩০ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তাদের অবস্থা খুবই খারাপ।
মিয়ামারের আরাকানের সিটুএ-তে বাংলাদেশের সাবেক মিশন প্রধান মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম বলেন, কিছু রোহিঙ্গা মিয়ানমার বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। ফলে এখন মংডু এলাকার রোহিঙ্গারা আরাকান আর্মির টার্গেটে পরিণত হয়েছে। আর এ কারণেই আরাকান আর্মি গত সপ্তাহে ওই ড্রোন হামলা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আমরা যে খবর পাচ্ছি, তাতে প্রতি দিনই সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। আর তারা সীমান্তে এসে জড়ো হচ্ছেন। সীমান্ত সীল করা থাকায় তারা বাংলাদেশে ঢুকতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, মংডুতে যা হচ্ছে, তা যদি না কমে, তাহলে বাংলাদেশ সীমান্তে চাপ বাড়তেই থাকবে। তখন পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নিরাপত্তা ও টহল জোরদার করা হয়েছে। ফোর্সও বাড়ানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত নতুন কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি।
কেএস//