যে অভ্যাসগুলো জীবনকে উন্নত করবে
শরীর নিয়ে যত্নশীল হলেও মন নিয়ে কেউ ভাবেন না। অথচ মন ভাল রাখা শরীর ভাল রাখার মতোই জরুরি। আনন্দ, আবেগ-ভালবাসা, এই সমস্ত অনুভূতির সঙ্গে জুড়ে থাকে বিশেষ বিশেষ হরমোন। কিছু নির্দিষ্ট হরমোনের কম-বেশি প্রভাব সরাসরি পড়ে মানসিক স্থিতিতে। সেই তালিকায় রয়েছে, সেরোটোনিন, ডোপামিন, অক্সিটোসিন, এন্ডরফিন। খুব সূক্ষ্ম ভাবে মন ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা থাকে এই ‘হ্যাপি হরমোনের’।
দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়ে রুটিনে শরীর ও মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখন কী করলে মন ভাল থাকবে? হ্যাপি হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পাবে?
পছন্দের শরীরচর্চা
শরীরচর্চায় ডোপামিন, এন্ডরফিন, সেরোটোনিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তবে জোর করে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও কাজ করতে গেলে, তা হয় না। তাই প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে যদি হাঁটতে যেতে বা যোগাসন করতে না ভাল লাগে, তা হলে দেখতে হবে, কী ধরনের শরীরচর্চায় আগ্রহ রয়েছে। কারও সাঁতারে উৎসাহ থাকে, কেউ আবার নাচ করতে ভালবাসেন। গতানুতিক শরীরচর্চার বদলে নাচ, জ়ুম্বা, অ্যারোবিক্স বেশি আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। কোনও কিছু ভাল না লাগলে, পছন্দের গান চালিয়ে ঘরে একলা নাচও করতে পারেন।
বেড়াতে যাওয়া
মন ভাল করার সবচেয়ে ভাল উপায় বেড়াতে যাওয়া। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বেরোলে আড্ডা, গল্পে মন মুহূর্তে ভাল হয়ে যায়। হ্যাপি হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। কাউকে না পেলে একাই বেরিয়ে পড়তে পারেন। বাইরের খোলা হাওয়ায় খানিকটা হাঁটলেই মন-মেজাজ ফুরফুরে হয়ে যাবে। রোজের অফিস একঘেয়ে লাগবে, সেটাই স্বাভাবিক। বিকেলের দিকে খানিকটা বিরতি নিয়ে অফিসের পাশেই এক পাক হেঁটে নিতে পারেন।
খাওয়া
স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার, যেমন ইয়োগার্ট, বিন্স, ডিম, আমন্ড ডোপামিন ক্ষরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তেল-মশলাদার খাবারে এন্ডরফিনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। মনখারাপ লাগলে বা কোনও কিছু ভাল না লাগলে তাই ফুচকা বা লোভনীয় খাবার খেলে বেশ ভাল লাগে।
গান শোনা
পছন্দের গান ও সুর হ্যাপি হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি করে। সারা দিনের পর বা কাজের ফাঁকে পছন্দের কোনও গান শুনলে মন ভাল লাগে। যাতায়াতের সময় গাড়িতে বসে, খানিক ক্ষণ গান শুনলে মন ভাল হয়ে যায়।
সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো
বিশেষ বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গেলে, বা কোথাও খেতে গেলেও কিন্তু মন ভাল হবে। বেড়ানো, হাতে হাত ধরা, ঘনিষ্ঠতা মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। অক্সিটোসিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। রোম্যান্টিক মুহূর্ত যাপন মন ভাল করার ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার অন্যতম শর্ত।
শখ
ভাললাগার যে কোনও জিনিসই কারও কাছে মানসিক ক্লান্তিমুক্তির উপায় হয়ে উঠতে পারে। পছন্দের রান্না, ছবি আঁকা, বই পড়া, বাগানের পরিচর্যা, যাঁর যা পছন্দ, তাতে মন দিলেও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। সামাজিক মাধ্যমের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারও মনের জন্য ভাল হতে পারে। কোনও বন্ধুর সঙ্গে খানিক গল্প, কোনও বিশেষ দিনের স্মৃতিচারণ আনন্দের আবহ তৈরি করে।