শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েও থেমে নেই, ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে : মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন। খুব বড় গলায় বলতেন—‘আমি পালাবো না, আমি শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে’। কিন্তু আজ লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন। পালিয়ে গেলেও চুপ করে বসে নেই। ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন। বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৪ আগস্ট) রংপুরের পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তারা পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো রয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে দাবি জানিয়েছি, যেসব পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার করতে হবে। হাসিনার বিচার করতে হবে। হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্যদের লুটপাট ও খুনের বিচার করতে হবে। বিচার শুরু হয়েছে। আল্লাহ করে দিয়েছেন। আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর। ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। তারা আজ নিজেরাই পালিয়েছে। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।’
আবু সাঈদ বুকের রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে ইতিহাস হচ্ছে, তরুণদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। ফ্যাসিবাদী, খুনি সরকারের পতনের দাবিতে শত শত মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ যখন গণভবনের দিকে যাচ্ছিল, তখন হাসিনা ভয়ে পালিয়ে গেলেন। পালিয়ে গেলেও চুপ করে বসে নেই। ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন।’
তিনি বলেন, ‘হাসিনার বিচার দাবিতে সব রাজনৈতিক দল আজ সমাবেশ করছে। হাসিনা শত শত মানুষকে হত্যা করেছেন, গুম করেছেন। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে হাসিনা একটা একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন।’
কোটা আন্দোলনে রংপুরে নিহত আবু সাঈদ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবু সাঈদ একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করেছি। আজ তারা বাকরুদ্ধ। কথা বলতে পারছেন না। অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে। আবু সাঈদের মতো যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মত্যাগ সফল করতে আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
এরআগে দুপুর পৌনে ২টার দিকে গাড়িবহরে করে পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে পৌঁছান মির্জা ফখরুল। সেখানে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন। পরে নিহতের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং সমবেদনা জানান।
এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগরের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গেলো ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
এসি//