দেশজুড়ে

গাজী টায়ার কারখানা পুড়ে অঙ্গার, ধসে পড়ার শঙ্কা

গাজী টায়ার কারখানা ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী টায়ার কারখানার আগুন টানা ৩২ ঘণ্টা জ্বলার পর অবশেষে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ভোরে পুরোপুরি নিভেছে। তবে ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভেছে। তবে ভবনটির অবস্থা নাজুক; উত্তাপে বেঁকে গেছে। তাই পরিস্থিতি বুঝে ভেতরে ঢুকে উদ্ধার অভিযান শুরু করবেন তারা।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘দীর্ঘ চেষ্টার পর আপাতত ফ্লেম (অগ্নিশিখা) ডাউন (নেভানো) করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো ভবনের ভেতরে হিট (উত্তাপ) আছে৷ অল্প অল্প করে আগুন জ্বলছে৷ ভবনটা বেঁকে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে৷ কয়েকটা জায়গায় সুরকির মতো হয়ে গেছে। ভেতরে ঢুকে কাজ করা যাচ্ছে না৷ নিচতলার সিঁড়ি পর্যন্ত ঢোকা গেছে কেবল।’

তিনি বলেন, ছাদের কোনো অংশে হতাহত কাউকে পাওয়া যায়নি। ভবনের ভেতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি৷ আগুনটা যেহেতু নেভানো গেছে, সবকিছু বিবেচনা করে ভেতরে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পূর্ব পাশে দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী গাজী গ্রুপের গাড়ির টায়ার প্রস্তুতকারী গাজী টায়ারস কারখানার অবস্থান৷ কারখানাটির মালিক সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী৷ রোববার (২৫ আগস্ট) ভোররাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি।

জানা যায়, গোলাম দস্তগীরের গ্রেপ্তারের খবর তার নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকেই সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়৷ দুপুরের দিকে টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানাটির অদূরে একটি মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করা হয়। ঘোষণার পর কয়েকশ মানুষ জড়ো হন কারখানাটির সামনে, শুরু হয় লুটপাট৷ দিনভর লুটপাটের পর রাত ৯টার দিকে কারখানাটির ভেতরের একটি ছয়তলা ভবনে আগুন দেয় লুটপাটকারীদের একটি দল৷ সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও লুটপাট চলে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এদিকে এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজনরা৷ নিখোঁজদের মধ্যে কয়েকজন নারীর নামও পাওয়া গেছে। নিখোঁজদের কেউ কারখানাটির কর্মী নন। সবাই আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। ধারণা করা হচ্ছে, তারা লুটপাটের সময় ভবনটির ভেতরে ছিলেন, কিন্তু আগুন লাগার পর আর বের হতে পারেননি।


কেএস// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন