আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

দুর্গন্ধে মিলল মা ও দুই ছেলের মরদেহ

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে  মা ও দুই ছেলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ শনিবার (০১ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের মৌপুর গ্রাম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বেলকুচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজমিলুর রহমান নিশ্চিত করেন।

নিহতরা হলেন-  উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের মৌপুর নতুনপাড়া গ্রামের সুলতান হোসেনের স্ত্রী মোছা. রওশন আরা (৪০), মেজো ছেলে জিহাদ (১০) ও ছোট মাহিম (৩)।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে মা ও দুই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশের তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এর সঠিক কারণ জানা যাবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুলতান কিছু দিন আগে জেল থেকে বের হয়েছেন। তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। এলাকাবাসী তাকে বহু বিবাহে আসক্ত হিসেবেই চেনেন।

স্থানীয় বাসিন্দা পারভেজ আলী বলেন, শনিবার বিকেলে হঠাৎ রওশন আরার বোন পাশের গ্রামের বেলাল হোসেনের স্ত্রী বোনের বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান। তখন ওই ঘর থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। পরে তালা ভেঙে তার বোন ও দুই ছেলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে  এলাকাবাসী এসে থানায় খবর দেন।

পুলিশ এসে মরদেহগুলো উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বরকত আলী গণমাধ্যমকে বলেন, ঘরটি বাইরে থেকে দরজায় শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ ছিল। রওশন অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন। তার স্বামীর এটা ছাড়াও একাধিক স্ত্রী আছে। নিহতদের বাড়ির পাশে আরেকটা বাড়ি থাকলেও তারা ঢাকায় থাকেন। তাই হয়তো ৪-৫ দিন হলো মরদেহগুলো ঘরে এভাবে থাকলেও কেউ জানতে পারেনি।

ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, একদিকে গ্রামটি আমার ইউনিয়নের একদম শেষ প্রান্তে। অন্যদিকে ওই বাড়িটি গ্রাম থেকে অনেকটা দূরে একদম মাঠের ভেতরে। তবে নিহত রওশন আরার স্বামী সুলতান মাদকসহ নানান অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। সে মাঝে মাঝেই দুই-তিন মাসের জন্য হারিয়ে যায়। যেখানে যায় সেখানেই একটি করে বিয়ে করে। যেহেতু মরদেহগুলো ঘরে ছিল এবং ঘরের বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল তাই মনে হচ্ছে এটা অবশ্যই হত্যাকাণ্ড। তবে সুলতান এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কিনা এটা বলতে পারছি না। তবে সে খারাপ প্রকৃতির মানুষ।

বেলকুচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজমিলুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বাড়ি থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেন। আমরা এসে দেখি ঘরের মধ্যে মরদেহগুলো পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে অন্তত ৪-৫ দিন আগে এদের মৃত্যু হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের সিআইডি ও পিবিআই টিমও এসেছিল, তারাও কাজ করছেন। মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

মেঘ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন