শ্রম অধিকার লঙ্ঘনে বাংলাদেশের চিত্র
বিশ্বে শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের দিক থেকে অন্যতম দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এই তালিকায় আফগানিস্তান, জর্ডান ও জিম্বাবুয়ের মতো দেশও রয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফাম ও ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে ‘দ্য কমিটমেন্ট টু রিডিউসিং ইনইক্যুয়ালিটি (সিআরআই) ইনডেক্স ২০২৪’ বা ‘অসমতা হ্রাসের অঙ্গীকার সূচক’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বাংলাদেশে শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের চিত্র উঠে এসেছে
প্রতিবেদন জানানো হয়, ২০২৪ সালের সূচকে ১৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৬১তম স্থানে। শ্রম অধিকার রক্ষায়ও বাংলাদেশ তলানির দিকেই, অবস্থান ১৫৫তম। অক্সফামের ‘অসমতা হ্রাসের অঙ্গীকার সূচক’ অনুযায়ী, শ্রমনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রয়েছে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে।
এ বছর বাংলাদেশ অসমতা হ্রাসের সূচকে ১৭ ধাপ পিছিয়ে ১২৪তম স্থানে নেমে এসেছে, যেখানে ২০২২ সালে ছিল ১১৭তম। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে।
অক্সফাম আরও উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের করপোরেট করহার কমালেও ভ্যাটের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এর ফলে ধনী-গরিব সবাই একই হারে ভ্যাট প্রদান করেন। বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৭০ শতাংশ আসে এই পরোক্ষ কর থেকে, যা দরিদ্রদের ওপর বেশি চাপ ফেলে।
প্রতিবেদনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের করনীতি, সরকারি সেবা এবং শ্রমনীতির বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ সূচকে বাংলাদেশের সরকারি সেবায় অবস্থান ১৩৫তম, করনীতিতে ৭১তম এবং শ্রমে ১১৮তম। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো কিছু দেশ শ্রমনীতির উন্নতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, কিন্তু বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে।
গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও, ধনী-গরিবের আয় বৈষম্যও বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে দেখা গেছে, আয় বৈষম্যের পরিমাপ গিনি সহগ ২০০০ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৫০, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৪৯৯-এ। সম্পদের বৈষম্যের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপ।
জেডএস/