আইন-বিচার

আ. লীগসহ ১১ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিট প্রত্যাহার

আওয়ামী লীগ আমলের বিগত তিনটি নির্বাচন বাতিলসহ ১১টি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা চেয়ে রিট প্রত্যাহার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রিটকারীদের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচাপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ  দিয়েছেন। 

এ আদেশের পরে আদালতে রিটকারীদের আইনজীবী আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, রিটকারীরা আর এটি চালাতে চান না। এ কারণে হাইকোর্ট রিট আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।  

একই সঙ্গে বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (দশম, একাদশ ও দ্বাদশ) বৈধতা নিয়ে করা রিটটিও না চালানোর কথা জানান তিনি।

এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১১টি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলেও জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও অন্যতম সমন্বয়ক সার্জিস আলম।

দলগুলো হলো—আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম-এল) (দিলীপ বড়ুয়া), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, তরীকত ফেডারেশন, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, এলডিপিসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

ওই রিটে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা দেয়ার আরজি জানানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ তিন জন রিটটি করেন। অপর দুজন হলেন মো. আবুল হাসনাত ও মো. হাসিবুল ইসলাম।

এছাড়াও দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে অপর একটি রিটও করেন তারা। এসব দল যেন আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

রিটে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। তিনটি নির্বাচনের গেজেট নোটিফিকেশন বাতিল চাওয়া হয়েছে রিটে। এই তিনটি নির্বাচনে যারা সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তাদের সব সুযোগ-সুবিধা ফেরত নিতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ১১ দল যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে তার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। যারা এমপি হয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কেন রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

রিটের ওপর আজ হাইকোর্টে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তারই আগেই এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তারা।

১১টি দলের বিষয়ে করা রিটে জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), গণতন্ত্রী দল, মার্ক্সিস্ট-লেলিনিস্ট (বড়ুয়া) ও সোসিওলিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশকে বিবাদীও করা হয়।

রিটে উল্লেখ করা হয়- নির্বিচারে মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়।

১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের পাশাপাশি ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে দলগুলোকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয় রিটে। এর আগে দুটি রিট করার কথা জানিয়ে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও অন্যতম সমন্বয়ক সার্জিস আলম। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কিংবা নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে কোনো রিট করা হয়নি বলে জানান তারা।

 

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন