আর্কাইভ থেকে এশিয়া

রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচারের আশ্বাস মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী নেতাদের

২০১৭ সালে মিয়ানমারে তৎকালীন নির্বাচিত সরকারের শাসনামলে রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সামরিক বাহিনীর বর্বর নির্যাতন শুরু হয়েছিল। তাদের হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। তখন এর বিরোধিতা করে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য করেনি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেতারা। তবে গেল এক ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর এখন রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার ও প্রত্যাবাসনের কথা বলছে তাদের অনেকেই।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রাখাইন রাজ্যে নির্যতনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের নেতারা। বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে তাদের পক্ষে রীতিমতো শপথ করে এ ঘোষণা দিয়েছেন জান্তা সরকার বিরোধী নেতা ডা. সাসা। রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে দায়ী সামরিক জেনারেলদের যুদ্ধপরাধের বিচার না করা পর্যন্ত শান্ত হবেন না বলে আশ্বাস দেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে ডা. সাসা বলেন, মিয়ানমারের মহান ও সাহসী মানুষদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধাপরাধ, নৃশংসতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালানো হয়েছে তার জন্য সামরিক জেনারেলদের বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত বিশ্রাম নেবে না তারা।

ডা. সাসার বিরুদ্ধে সামরিক জান্তা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন তিনি।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সংসদ সদস্যসহ জান্তাবিরোধী একটি গোষ্ঠীর পক্ষে এই ঘোষণা দেন ডা. সাসা। তিনি নিজেও সামরিক বাহিনীর কাছে নিপীড়িত হওয়ার দাবি করেন পেশায় চিকিৎসক এই নেতা।

ডা. সাশার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনেছে দেশটির জান্তা সরকার এবং তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাদের বর্বর নির্যাতন, লুটপাট, ধর্ষণ ও গণহত্যার অভিযোগে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। এতে সমর্থন রয়েছে বাংলাদেশ, ওআইসিসহ আরও অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার। তবে মামলার অভিযোগগুলোর বিষয়ে কখনো খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি মিয়ানমারের তৎকালীন গণতান্ত্রিক সরকারকে। বরং রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে আইসিসিতে মিয়ানমারের হয়ে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন দেশটির নেতা অং সান সু চি

এ অবস্থায় এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার রাস্তা খুঁজছে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতারা। আইসিসির মাধ্যমে কোনভাবে জান্তার মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত করা যায় কিনা সে চেষ্টাই করছে এসব নেতা।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন