মাকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখা সেই ছেলে আটক
জুয়া এবং হাত খরচের টাকা জোগাতে মাকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয় ছেলে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে ঘটনাকে ডাকাতি বলে দাবি করলেও। বগুড়ায় আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করলো র্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়ায় নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান।
তিনি জানান, বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার দারুস সুন্নাহ কামিল মাদ্রাসার ছাত্র সাদ বিন আজিজুর (১৯) অনুলাইন জুয়ায় আসক্ত। হাত খরচের টাকার জন্য মায়ের সঙ্গে তার প্রায়ই ঝগড়া হয়। এ ছাড়া মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে টাকা হারিয়ে যেত। গেলো ১০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে আসে। এ সময় তার মা বটি দিয়ে কুমড়া কাটছিলেন। পরিকল্পনা অনুসারে পেছন থেকে মায়ের নাক ও মুখ চেপে ধরে।
ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বটি দিয়ে সাদের তর্জনী আঙুল কেটে যায়। এরপরও সে দুই হাত দিয়ে নাক ও মুখ চেপে ধরলে শ্বাসরোধে মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে। হত্যার ঘটনা ডাকাতি হিসেবে প্রচার করতে ওড়না দিয়ে মায়ের দুই হাত-পা বেঁধে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখে।
র্যাব কর্মকর্তা জানান,ঘটনাকে ডাকাতি হিসেবে প্রমাণ এর উদ্দেশ্যে সাদ কুড়াল দিয়ে আলমারিতে কয়েকটি কোপ দেয়। এরপর প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বাইরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর বাড়িতে ফিরে মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে বাবা আজিজুর রহমানকে ফোনে ডেকে আনে। পরে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ উম্মে সালমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
র্যাব আরও জানায়, দিনের বেলা সুরক্ষিত বাড়িতে এই নারীকে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘাতক ছেলে সাদকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল কাহালু উপজেলার পাঁচপীর আড়োবাড়ি এলাকায় দাদা রমজান মোল্লার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সাদ তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার ও বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নিহতের বড় সন্তান নাজমুস সাকিব বাদী হয়ে সাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। সাদকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি রেকর্ডের জন্য আবেদন করা হবে।
আই/এ