সরকারকেই বলতে হবে নির্বাচনের জন্য কত সময় লাগবে : টিআইবি
অন্তর্বর্তী সরকার যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করেছে তা রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ। এসব কমিশন প্রতিবেদন দেবে। প্রতিবেদনের ওপর বাস্তব সংস্কার সম্পূর্ণ করতে হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকারকেই বলতে হবে, নির্বাচনের জন্য কতটুকু সময় লাগবে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সরকার পতন-পরবর্তী ১০০ দিনের ওপর টিআইবির পর্যবেক্ষণ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপসহ আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ সৃষ্টি না করে চট করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন হবে না। রাষ্ট্র সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে আন্দোলনের উদ্দেশ্যও ব্যাহত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে ১০টি কমিশন গঠন করলেও সবগুলো কমিশন এখনো গতিশীল হয়নি। অন্যদিকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ও ব্যক্তি মালিকানা খাত এখনো সংস্কার আওতামুক্ত রয়েছে।
বিচার ও সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক আছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অ্যাডহক প্রবণতা, উপদেষ্টা পরিষদ গঠন ও দায়িত্ব বণ্টনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বিতর্কিত হয়েছে। আর্থিক খাতের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তবে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ এখনো সফল হয়নি।
টিআইবি জানায়, সরকারের চলার পথে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর অর্পিত দায়িত্ব বাস্তবায়নে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় কৌশল ও রোডম্যাপ প্রণয়নের সুযোগ নেওয়া হয়নি, যা এখনও অনুপস্থিত।
সংস্থাটি থেকে বলা হয়, পটপরিবর্তনের পর গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ ও হুমকি-হামলাসহ কোনও কোনও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করার তৎপরতা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। সহিংসতা ও বলপ্রয়োগের কারণে জেন্ডার, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
টিআইবির গবেষণায় আরও বলা হয়, ভারত কর্তৃক কর্তৃত্ববাদ পতনের বাস্তবতা মেনে নিয়ে নিজেদের ভুল স্বীকারে ব্যর্থতা ও তার কারণে অপতৎপরতার ফলে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনে সরকার ও দেশের জন্য ঝুঁকি বেড়েছে।
সরকার পতনের পর সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ হলো, বিএনপি দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা না করে দখলবাজি-চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। ধর্মভিত্তিক প্রভাব বেড়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর। অন্যদিকে দায় স্বীকার প্রশ্নে নিশ্চুপ রয়েছে আওয়ামী লীগ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির প্রধান গবেষক শাহজাদা এম আকরাম। প্রতিবেদন তৈরিতে আরও যুক্ত ছিলেন মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমান ও মো. মোস্তফা কামাল।
আই/এ