সঞ্জীবের প্রয়াণের ১৭ বছর
কিছু মানুষ কখনও হারিয়ে যান না। তাদের কাজ, সৃষ্টিশীলতা আর স্মৃতিতে তারা চিরজীবী হয়ে থাকেন। এমনই একজন বিপ্লবী গায়ক, গীতিকবি এবং সাংবাদিক ছিলেন সঞ্জীব চৌধুরী। আজ, ১৯ নভেম্বর, তার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৭ সালে এই দিনে, মাত্র ৪৩ বছর বয়সে, তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। তবুও, তার লেখা, সুর করা, আর গাওয়া গানগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি আজও জীবন্ত।
সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘দলছুট’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তার সঙ্গে ছিলেন সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার। তাদের যুগলবন্দী থেকে এসেছে অমর সব অ্যালবাম যেমন- ‘আহ্’ (১৯৯৭),‘হৃদয়পুর’ (২০০০),‘আকাশচুরি’ (২০০২),‘জোছনা বিহার’ (২০০৭)।
এই গানগুলোতে প্রেম, জীবন, আর মানবিকতার অনুভূতি এমনভাবে মিশে আছে যে আজও কনসার্টে কিংবা টিভি শোতে দর্শকেরা সঞ্জীবের গাওয়া গান শুনতে চান। তার সৃষ্টির মধ্যে উল্লেখযোগ্য গান হলো- ‘আমি তোমাকেই বলে দিব’,‘আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ’,‘বায়োস্কোপ’,জীবনের শুরু থেকে শিল্পের পথে।
১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর সঞ্জীব চৌধুরীর জন্ম হয় হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে। তাঁর বাবা ছিলেন গোপাল চৌধুরী এবং মা প্রভাষিনী চৌধুরী। পরিবারে ৯ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সপ্তম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় পড়াশোনা শেষ করে তিনি সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার প্রখর বুদ্ধি, সাহসী লেখনী আর শিল্পের প্রতি গভীর ভালোবাসা তাকে একজন আলাদা মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।
১৭ বছর পরও সঞ্জীব চৌধুরীর স্মৃতি মুছে যায়নি। ‘দলছুট’ ব্যান্ডের সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার প্রতিনিয়তই তার গান পরিবেশন করেন। তার সম্পর্কে বলতেই শোনা যায়, 'তিনি ছিলেন শব্দ আর সুরের যাদুকর'।
সঞ্জীবের চলে যাওয়া তার ভক্তদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তবে তাঁর সৃষ্টি থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম অনুপ্রেরণা নিতে থাকবে। সঞ্জীব চৌধুরী বেচে থাকবেন তার সুরে, গানে, আর মানুষের হৃদয়ে।
জেডএস/