মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিং
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা ও আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র
‘আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে সমর্থন করি এবং বাংলাদেশ সরকারকে স্পষ্ট করে দিয়েছি বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-বিক্ষোভে সহিংস দমন-পীড়নে জড়িত হওয়া কোনো ভাবেই উচিত নয়।’ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়নের প্রশ্নে এভাবেই নিজেদের অবস্থান আবারও স্পষ্ট করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচকেরা। বিশেষ করে ভারত বরাবর তাদের উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতিবাদ, সমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়েও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ও তার জবাব এখন নিয়মিত ঘটনা। স্থানীয় সময় সোমবার(১৮ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে অওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, সাংবাদিকদের জেল ও তাদের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চান যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভারতীয় এক নারী সাংবাদিক।
ভারতীয় ওই নারী সাংবাদিকের প্রশ্নটি ছিল, ‘আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সংঘবদ্ধ হামলার আশঙ্কাজনক খবর শোনা যাচ্ছে। নারীদের ওপর হামলা, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, সাংবাদিকদের জেল এবং প্রেস কার্ড(প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড) বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ‘মনসুন বিপ্লব’ নামে পরিচিত ছাত্র–জনতার আন্দোলন এবং এর মাধ্যমে দেশকে ফের শুরুর দিকের অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা বলছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচকেরা। আমরা দেখেছি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এখানে দাঁড়িয়ে এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে আপনার কী কোনো কথা হয়েছে?’
জবাবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো কূটনৈতিক আলাপের বিষয়ে বলতে অপারগতা প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আমি এখান থেকে ব্যক্তিগত কূটনৈতিক সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত বিষয় নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি না।তবে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে স্পষ্ট করে দিয়েছি, যেমনটি আমরা সারা বিশ্বের দেশগুলির কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে সমর্থন করি এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সহিংস দমন-পীড়নে জড়িত হওয়া সরকোরের কোনো ভাবেই উচিত নয়।’
এসময় সংবিধান সংশোধনী সংক্রান্ত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ নিয়ে আরেকটি প্রশ্ন করে এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চান ভারতীয় ওই নারী সাংবাদিক। তার প্রশ্নটি ছিলো, ‘বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন, যেখানে দেশটিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ বাড়ছে। এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অবস্থান আছে কিনা?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমি বিষয়টি টুকে রাখছি এবং আমাদের দপ্তরে আলোচনা করে দেখব যে, আমাদের এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য আছে কি না।’
এমআর//