দেশজুড়ে

দত্তকের পরে সন্তান কোলে ফিরলেও মানসিক ভারসাম্য হারালেন মা

গত চারদিন আগে ৯ মাসের সন্তানকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে দত্তক দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে গেছেন শরীফা খাতুনতবে ভারসাম্য হারালেও নানা নাটকিয়তার পর আবারো মায়ের কোলে ফিরেছে সন্তান

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে অবগত হয়ে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্ত করতে সক্ষম হয়েছে শিশুটিকে ।

শরীফার বড় ছেলে নয়ন ইসলাম (১৬) বলেন, চার দিন আগে তার মা ছোট বোনকে নিয়ে পঞ্চগড়ে যায়। পরে একসময় বাড়িতে একা এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করে। বিষয়টি জানার জন্য ও বোন কোথায় তা জানতে চাইলে তার মা কোন কিছু জানাচ্ছিলো না।

পরে অনেক কৌশলে বোনের অবস্থান জানতে পারেন সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। ওই বাড়ির লোকজন জানায় মা বোনকে নিবে না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেয়। পরে সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে তার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে তিন  মা ও বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসেনবর্তমানে তার বোনের দেখাশোনা তিনি নিজে করছেন

জানা যায়, গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ ক্ষেতে রেখে ভিক্ষা করতে যায় শরীফা খাতুন। এসময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী। একই সাথে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যায় শরীফা।

মোস্তাফিজুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি বলেন, অনেক আগ থেকে ওই মহিলাকে দেখছি। সে ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালায়। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে এখন প্রায় পাগল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন  বলেন, সাংবাদিকদের  মাধ্যমে খবর পেয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেয়া হয়েছে। যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনও'কে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে

প্রসঙ্গত, এক বছর আগে শরীফা খাতুনের সঙ্গে তার স্বামীর বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে তিনি ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন