বিনোদন

যে ‘দুষ্টু’ প্রশ্নের উত্তর দিলেন অভিনেত্রী রুনা খান

অভিনেত্রী রুনা খান ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের শোবিজ জগতে জনপ্রিয় তারকা রুনা খান। মডেলিং, অভিনয়, মঞ্চ সবখানেই তার দাপুটে উপস্থিতি। বয়স চল্লিস পেরিয়ে গেলেও সমানতালে ছড়িয়ে চলেছেন রূপের দ্যুতি।আবার কখনও সাহসী অবতারে নিজেকে মেলে ধরে তাক লাগিয়েও দেন অনুরাগীদের।

এ নিয়ে কখনও বিতর্কিতও হয়েছেন অভিনেত্রী। তবে এসব কোনোকিছুকেই তোয়াক্কা না করে নিজের মতো করে এগিয়ে গেছেন রুনা খান। আর সাফল্যের মুখ দেখছেন অনায়াসেই।

সম্প্রতি নিজের ওজন অবিশ্বাস্যভাবে কমিয়ে  রাতারাতি আলোচনায় চলে আসেন রুনা খান। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই মডেল ও অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারের বয়স প্রায় দুই দশক। এরই মধ্যে অসংখ্য নাটকে কাজ করে নিজের অভিনয় শৈলী দেখিয়ে কুড়িয়েছেন প্রশংসাও।

শুধু অভিনয়েই নয়, বয়স বাড়ার সঙ্গে নিজের রূপ-লাবণ্যও ধরে রেখেছেন রুনা খান।সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে তার এই বয়সের রূপ-লাবণ্য নিয়ে অকপটে কথা বলতে দেখা গেল রুনা খানকে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মজার ছলে  রুনা খানের কাছে জানতে চাওয়া হয় তাকে এই বয়সে এখনও কেউ দুষ্টু বার্তা, কিংবা কোনো প্রস্তাব পাঠায় কিনা! এর জবাবে খানিকটা হেঁসে রুনা খান বলেন,

‘আমারই সমবয়সি অপূর্ব, নিশো। ওরাও তো দেখতে আকর্ষণীয়। ওদেরকে তো এই প্রশ্ন করা হয় না; তাদের পরিবার আছে, সন্তান আছে, তারপরও কেন আকর্ষণীয় লাগছে! তো ৪০-৪২ বছর বয়সী অপূর্বকে, শুভকে সুন্দর-আকর্ষণীয় দেখালে ৪০-৪২ বছর বয়সী রুনা খান, বাঁধনদেরকেও সুন্দর, আকর্ষণীয় দেখাতে পারে, একই জিনিস।’

রুনা খান  বলেন, ‘আমরা আসলে নারীদের ব্যাপারে নানারকম প্রশ্ন করতে, ভাবতে ভালোবাসি আমরা, এটা আমাদের অভ্যস্ততার ব্যাপার।’

অভিনয়শিল্পী হিসেবে রুনা খান স্বপ্নবাজ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অভিনয় করে যেতে চান। ভালো কাজের স্বপ্ন দেখেন। ভিন্ন ধরনের চরিত্রের প্রতি তাঁর লোভ সব সময়। তিনি জানান, তাঁর কাজ তাঁকে কখনো সন্তুষ্ট করে না।

রুনিা খান জানান, সুযোগ পেলে বয়স আশিতে গিয়েও মডেলিং ও অভিনয়ে যুক্ত থাকবেন বলে তিনি আশাবাদী। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার কাছে আসলে সৌন্দর্যের প্রতীক আমার মা। এছাড়াও শর্মীলা (শর্মীলা আহমেদ) আন্টি, দিলারা জামান, তারা। আমি যদি বেঁচে থাকি, সুস্থ থাকি তাদের বয়স পর্যন্ত, তাহলে ওনাদের মতো হতে চাই। তারা আশি বছর বয়সে গিয়েও অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেন, কিংবা আইস টুডের কাভার মডেল হতে পারেন।’

দিন কয়েক আগেই, কাজল আরেফিন অমির ওয়েব কনটেন্ট 'অসময়'-এ কাজ করে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন অভিনেত্রী। এ নিয়ে রুনা মনে করেন, 'অসময়' তাকে সুসময় এনে দিয়েছে। এখন ওয়েব কনটেন্টে কাজ করার পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে যুক্ত হচ্ছেন সিনেমাতেও।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জন্ম নেওয়া অভিনেত্রী রুনা খান রাজধানীর ইডেন কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। ২০০২ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে কর্মী হিসেবে যোগ দেন। ২০০৫ সালে জনপ্রিয় শিশুতোষ ধারাবাহিক ১২৩ সিসিমপুর এর মধ্যদিয়ে তার পেশাগত অভিনয় জীবনের শুরু। ২০১৬ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের নাম গোত্রহীন মঞ্চনাটকের মঞ্চায়নে তিনি অপি করিমের স্থলাভিষিক্ত হন।

পাকিস্তানি লেখক সাদাত হাসান মান্টোর তিনটি ছোটগল্প অবলম্বনে নাটকটির চিত্রনাট্য রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন ঊষা গাঙ্গুলী। এছাড়া তিনি আসাদুজ্জামান নূর নির্দেশিত নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের দেওয়ান গাজীর কিসসা মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। সারা যাকের এর নির্দেশনায় স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ নাটকে অভিনয় করেন।

তিনি আশফাক নিপুন এর ওয়েব ফিল্ম ‘কষ্টনীড়’,গৌতম কৈরির ওয়েবফিল্ম ‘আন্তঃনগর’, আবু হায়াত মাহমুদ এর ওয়েবফিল্ম ‘মার্ডার ৯০’স, অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ওয়েব সিরিজ ‘বোধ’ এ অভিনয় করেন।

এছাড়া তিনি গ্রামীনফোন,ডাচ বাংলা ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং, স্কয়ার টয়লেট্রিজ গ্রুপ,রাঁধুনী এবং বিএসআরএম স্টিল এর বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হন।

নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত গহীন বালুচর (২০১৬) চলচ্চিত্রে শামীমা চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা পান। ২০১৭ সালে আহত পাখির গান টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের জন্য এক ঘণ্টার নাটক ও টেলিফিল্মে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (প্রধান চরিত্র)বিভাগে আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।

এছাড়া একই বছর তৌকীর আহমেদ পরিচালিত হালদা চলচ্চিত্রে তাকে জাহিদ হাসান অভিনীত চরিত্রের বড় বউ জুঁই চরিত্রে দেখা যায়। এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।

২০১৮ সালে তিনি সাজেদুল আউয়াল পরিচালিত ছিটিকিনি ছবিতে কেন্দ্রীয় ময়মুনা চরিত্রে অভিনয় করেন।খান ২০তম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে সমালোচক শাখায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কৃত হন।

নির্মাতা মৃত্তিকা গুণ এর ‘কালো মেঘের ভেলা’ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র রোজীর রুপদান করেন রুনা খান।

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন