জাতীয়

চিন্ময় কৃষ্ণ, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে এবার বিবৃতি দিলো কংগ্রেস

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।

ভারত সরকারের পর বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।  

বুধবার (২৭ নভেম্বর) কংগ্রেসের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিসিটি বিভাগের চেয়ারম্যান পবন খেরা এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এমনটি জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া।   

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাবে বলে প্রত্যাশা করছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে কংগ্রেস আরও বলে, ইসকন সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তারের ঘটনা এই নিরাপত্তাহীনতার সর্বশেষ উদাহরণ।    

এর আগে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার ও জামিন নামঞ্জুর করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয় ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার ও জামিন নামঞ্জুর করার ঘটনায় আমরা গভীর  উদ্বেগ প্রকাশ করছি। বাংলাদেশি হিন্দু ও দেশটিতে থাকা অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর উগ্রবাদীদের একাধিক হামলার পরপরই এ ঘটনা ঘটলো। এছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ ও লুটের পাশপাশি মূর্তি ও মন্দির ভাংচুর ও অবমাননার বেশ কিছু নথিভুক্ত ঘটনা রয়েছে”    

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, যখন এসব ঘটনা ঘটিয়ে অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ঠিক সেই সময় একজন ধর্মীয় নেতা, যিনি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে বৈধ দাবি দাওয়া পেশ করছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আমরা আরও গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানাতে চাই, শ্রী দাসের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সংখ্যালঘুদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশেও হামলা করা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারসহ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে হিন্দু এবং সকল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহবান জানাই।” 

ভারতের এই বিবৃতির পর পাল্টা বিবৃতি দেয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের এমন ভিত্তিহীন বিবৃতি দুই দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার চেতনার পরিপন্থী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, এমন একটি বিষয় নিয়ে ভারত সরকার বিবৃতি দিয়েছে, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এরপরও অত্যন্ত হতাশা ও গভীর দুঃখের সঙ্গে সরকার লক্ষ করছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করার ঘটনাকে কিছু মহল ভুলভাবে তুলে ধরছে। (ভারতের) এ ধরনের ভিত্তিহীন বিবৃতি শুধু সত্যকে ভুলভাবে তুলে ধরছে না, পাশাপাশি দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার চেতনারও পরিপন্থী।

গেলো মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বরদুপুরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায় চট্রগ্রামের একটি আদালত। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থিত স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে গেলো ৩১ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়। মামলাটি করেন চট্রগ্রামের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়

 

এনএস/ 

    

 

 

 

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন