এক্সপ্রেসওয়েতে গুলিবিদ্ধ তরুণী আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে এক্সপ্রেসওয়েতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শাহিদা আক্তার (২২) নামের তরুণী আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ কারণে বিয়ে করতে চাপ দেয়ায় প্রেমিক তৌহিদ শেখ ওরফে তন্ময় (২৩) তরুণীকে গুলি করে হত্যা করে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলম সরকার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানান, শাহিদার সঙ্গে তন্ময়ের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা শোনার পর সাম্প্রতিক সময়ে শাহিদাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছিলেন তন্ময়। এর মধ্যে তন্ময় তাঁর পরিবারের পছন্দের অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
বিষয়টি শাহিদা জানতে পেরে তাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তন্ময় শাহিদাকে চিরতরে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
তিনি জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার রাতে শাহিদাকে মুঠোফোনে ওয়ারীর বাড়ি থেকে মাওয়ায় ইলিশ খাওয়ার কথা বলে ডেকে আনেন। শাহিদাকে নিয়ে খাওয়াদাওয়া শেষে রাতভর মাওয়া এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। শনিবার ভোরে শ্রীনগর দোগাছি এলাকার এক্সপ্রেসওয়েতে তাঁর সঙ্গে থাকা ওয়ারী থানা থেকে লুট করা পিস্তল দিয়ে শাহিদাকে গুলি করে হত্যা করেন।
তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর তন্ময় দোগাছি এলাকা থেকে ঢাকায় পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার আগে পিস্তলটি কেরানীগঞ্জের বটতলী বেইলি সেতুর নিচে ফেলে যান। পরে গতকাল সোমবার রাতে ভোলার ইলিশা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কি না সেটি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত করা যাবে।
নিহত তরুণীর মা জরিনা বেগম জানান, তিন মাস আগে শাহিদা ও তন্ময় সবার অজান্তে চাঁদপুরে ঘুরতে গিয়েছিল। সেখানে তন্ময় তার মেয়েকে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে দুজনকে ধরে নিয়ে যায়। তখন তাঁদের মধ্যে প্রেমের বিষয়টি তিনি জানতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন তন্ময় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ছেলে হিসেবেও ভালো না। এ কারণে মেয়েকে ওই ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তন্ময় বিভিন্ন সময় তার মেয়েকে ফুসলিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যেত। এসময়ে তিনি শাহিদা হত্যার বিচারও দাবি করেন।
আই/এ