বাংলাদেশ

ছাত্রদলের আমন্ত্রণে ২৮ ছাত্র সংগঠনের মতবিনিময় সভা

'ইসলামী ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ উপস্থিত ছিলেন না'

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আমন্ত্রণে ২৮টি ছাত্র সংগঠনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় ছাত্রনেতারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা নিহত পরিবারের পুনর্বাসন, দেশে সাম্প্রদায়িক উসকানিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর কাটাবনের একটি রেস্টুরেন্টে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মতবিনিময় সভায় ছাত্রনেতারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকাসহ সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

সভায় ছাত্রনেতারা বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে। দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। গণ-অভ্যুত্থানে ২,০০০ বেশি মানুষ শহিদ ও ৩০,০০০ বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ভারত রাজনৈতিকভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে এখন নানা ধরনের উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা তারই প্রকাশ। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে হলেও মোকাবিলা করবে।

জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা, নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। দেশে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক যেকোনো পদক্ষেপ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে। একই সঙ্গে দখলদারমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র ও সংগঠনের অধিকার চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ও ছাত্ররাজনীতি বন্ধের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবে। সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে (১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ও ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র) সংস্কার কমিশন গঠন করে সংস্কার শেষে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা হয়।

ছাত্রনেতারা বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্রসংগঠনগুলোকে অপরায়নের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অভ্যুত্থানে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল, গোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহারের কারণে তা ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই জাতীয় ঐক্যে যদি ভাঙনের সৃষ্টি হয়, তার দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবে না।

মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামি ছাত্র শিবিরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সভায় অংশ নেয়া ছাত্রসংগঠনগুলো হল: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (গণসংহতি), ছাত্র আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), জাতীয় ছাত্র সমাজ (জাফর), জাগপা ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ভাষানী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ (পার্থ), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র মজলিস, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগ (নুর আলম), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র সমাজ এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (মুক্তি কাউন্সিল)।

এম এইচ// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন