টিকটককে বিদায় জানালো যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়েছে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক। স্থানীয় সময় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত থেকে অ্যাপটি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। রোববার থেকে কার্যকর হওয়া নতুন একটি আইনের আওতায় টিকটকের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ কোটি গ্রাহক নিয়ে জনপ্রিয় এই অ্যাপটির কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতি দেয় টিকটক। স্থানীয় সময় শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টিকটকে প্রবেশের চেষ্টা করলে ব্যবহারকারীদের একটি বার্তা দেখানো হয়, যেখানে বলা হয়েছে- ‘দুঃখিত। এ মুহূর্তে টিকটকের সেবাগুলো চালু নেই। যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে একটি আইন চালু করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এর অর্থ হলো আপনি আপাতত টিকটক ব্যবহার করতে পারছেন না। তবে আমরা আশাবাদী কারণ নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি টিকটক পুনরায় চালু করতে আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন। দয়া করে আমাদের সঙ্গে থাকুন।’
অ্যাপটি ইতোমধ্যেই অ্যাপল এবং গুগল প্লে স্টোর থেকেও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাইটডান্সের মালিকানাধীন অন্যান্য অ্যাপ, যেমন ক্যাপকাট এবং লেমন৮-ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
টিকটকের চীন-ভিত্তিক মূল কোম্পানি বাইটডান্স নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক চলছিল। মার্কিন আইনপ্রণেতাদের দাবি, চীন সরকার টিকটকের মাধ্যমে মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে। এ ছাড়া ইসরায়েলি গণহত্যা নিয়ে কনটেন্ট সেন্সর না করায় টিকটককে 'ইহুদী-বিদ্বেষী' বলেও সমালোচনা করেন অনেক মার্কিন রাজনীতিবিদ।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে পাস হওয়া একটি আইনের আওতায় বাইটডান্স থেকে টিকটকের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতিক্রমে সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে চীনের ওয়াশিংটন দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছে, ‘তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে টিকটককে অন্যায়ভাবে দমন করছে।’
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর টিকটককে ৯০ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। শনিবার এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘টিকটককে ৯০ দিনের সময়সীমা দেওয়া উচিত। সোমবার এ বিষয়ে একটি ঘোষণা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
টিকটক তাদের ব্যবহারকারীদের প্রতি একটি বার্তায় জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তারা ফের চালু হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
টিকটকের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেক ব্যবহারকারী এই সিদ্ধান্তকে সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে অনেকেই এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য জরুরি বলে মনে করছেন। চীন বলেছে, তারা তাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।
এসি//