যৌন সম্পর্কের পর বিয়েতে অস্বীকৃতি, শিক্ষক নেতাকে বদলি
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক নারীকে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম ড. গাজী মো. তৌহিদুল আলম চৌধুরী। তিনি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর ড. গাজী মো. তৌহিদুল আলম চৌধুরীকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে হাজী আব্দুল বাতেন সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছে। তবে এ শিক্ষক নেতার দাবি, ধর্ষণের অভিযোগ এখনো তদন্তাধীন। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকেরা চক্রান্ত করে তাকে বদলি করিয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত ২০ জানুয়ারি তারিখের এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলি আদেশ জারি হয়।
ভুক্তভোগী নারীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি বগুড়া শহরে এক সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতেন। ২০২২ সালে একটি অনুষ্ঠানে ড. গাজী মো. তৌহিদুল আলম চৌধুরীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে দু’জনের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তৌহিদুল আলম তাকে দ্বিতীয় স্ত্রী করার প্রস্তাব দেন এবং বগুড়া শহরের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন।
ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তৌহিদুল আলম বগুড়ায় এবং ঢাকায় নিয়ে গিয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন। একপর্যায়ে বিয়ের জন্য চাপ দিলে, তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং সম্পর্ক অস্বীকার করেন।
এরপর ২০২৪ সালের নভেম্বরে ভুক্তভোগী নারী তৌহিদুল আলম চৌধুরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কিছু ছবি প্রমাণ হিসেবে সংযুক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবার লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, গেলো ১২ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার উপসচিব শাহিনা পারভিন অভিযোগ তদন্ত করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অনুরোধ করেন। এরপর গেলো ২০ জানুয়ারি ড. তৌহিদুল আলম চৌধুরীকে বদলি করা হয়।
এদিকে বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান সরকারি আজিজুল হক কলেজের আরও দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিন্নাতুল ইসলাম দুই বছর আগে এক ছাত্রীর করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
এ ছাড়া গেলো ৫ আগস্টের পর ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে বদলি করা হয় বাংলা বিভাগের আরেক সহকারী অধ্যাপক লাবলু সরকারকে।
এসব বিষয়ে সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শওকত আলী মীর বলেন, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দুঃখজনক। তিনি বলেন, ঘটনা যাই হোক, এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করছে।
এসি//