আইন-বিচার

প্রেস ব্রিফিংয়ে টবি ক্যাডম্যান

আশা করি হাসিনাকে ফেরত দিয়ে ভারত ন্যায়বিচারের পক্ষেই থাকবে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠিয়ে ভারত ন্যায়বিচারের পক্ষেই থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান।

সোমবার(২৭ জানুয়ারি) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

গেলো ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের  ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ‍মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতেই অবস্থান করছেন। আন্দোলন চলাকালে হতাহতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আড়াইশোর বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলার বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সেই চিঠির কোনো জবাব এখনও  দেয়নি ভারত।

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দেওয়া ওই চিঠির উত্তরে ভারতের মৌনতার বিষয়ে সোমবার  এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে  টবি ক্যাডম্যান বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথাযথভাবে ভারতকে প্রত্যর্পণের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তবে এটা ভারতের ব্যাপার যে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে, নাকি তাকে (হাসিনা) বিচার থেকে রেহাই দেওয়ার পক্ষে অবস্থান করবে। আমি আশা করি ভবিষ্যতে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষেই অবস্থান নেবে।’

চিঠির জবাবে ভারতকে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকার জোর করতে পারেন না উল্লেখ করে টবি ক্যাডম্যান আরও বলেন, ‘কিন্তু আমরা আশা করতেই পারি যে তাকে এ দেশে আনা হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করা হবে। এখানে বলে রাখা ভালো, ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সব সুযোগ পাবেন।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ এই আইনজীবী বলেন, আমি এখানে একজন পেশাদার হিসেবে কাজ করতে এসেছি এবং তাই করব। অতীতের কোনো ঘটনা, কারও কার্যকলাপ কিংবা পূর্বে আমার কাজের পরিধি কী ছিল তা একে প্রভাবিত করবে না।’

প্রসঙ্গত, টবি ক্যাডম্যান হলেন একজন ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ও মানবাধিকার আইনে বিশেষজ্ঞ লন্ডন-ভিত্তিক আইন সংস্থা গুয়ের্নিকা ৩৭ চেম্বারের যুগ্ম প্রধান। যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, সন্ত্রাসবাদ এবং দুর্নীতিসহ আন্তর্জাতিক আইনি বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। গেলো ২০ নভেম্বর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক  হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর আগে ইয়েমেন গৃহযুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের তদন্ত, রাশিয়ার সাবেক ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস অফিসার আন্দ্রেই লুগোভোইয়ের প্রতিনিধিত্ব, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় কথিত যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে ভূমিকার জন্য বাশার আল-আসাদের অধীনে সিরিয়ার সরকারকে লক্ষ্য করে একাধিক তদন্ত, রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য মিয়ানমারকে জবাবদিহি করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় কাজ করেছেন  এই ব্রিটিশ আইনজীবী।  

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন