সিপিডির সুপারিশ: আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করা হোক
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) বন্ধ করে দ্বৈত শাসন বন্ধ করা উচিত, যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করা যায় এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আরও শক্তিশালী হয়। এমন সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সিপিডি কার্যালয়ে 'বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫: সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ সুপারিশ তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, এফআইডির কার্যক্রমের কারণে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা কমে গেছে, যা নীতি নির্ধারণে সমস্যা সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে, বিগত সরকারের সময় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ব্যাংকিং খাতকে দুর্বল করেছে।
ড. ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে উঠেছে। ২০০৯ থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, এবং সেপ্টেম্বর ২০২৪ অনুযায়ী তা ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা মোট অপরিশোধিত ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ। এই বিপুল খেলাপি ঋণ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে।
তাছাড়া, দেশের ব্যাংকগুলোর সাম্প্রতিক অপ্রত্যাশিত ধাক্কা সামাল দেওয়ার সক্ষমতা কমে গেছে। ২০২৪ সালের জুনে ব্যাংকের ক্যাপিটাল-টু-রিস্ক ওয়েটেড এসেট রেশিও (সিআরডব্লিউএ) ছিল ১০.৬৪ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ ৬.৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
সিপিডি ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য তাৎক্ষণিক, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করার সুপারিশ করেছে। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা, আইন ও বিচারিক পরিবেশ উন্নয়ন এবং সঠিক ও সময়মত তথ্য নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষত, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন রক্ষায় এফআইডি বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি বলে সিপিডি মনে করে। এছাড়া, প্রাক্তন গভর্নরদের জবাবদিহি, সাইবার হ্যাকিংয়ের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ এবং নতুন ব্যাংক লাইসেন্স ইস্যু বন্ধ করার মতো তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ//