ট্রাম্পের চোখ কানাডার খনিজ সম্পদের দিকে, শঙ্কিত ট্রুডো!
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চল নিজেদের দখলে নিতে আগ্রহী। দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার সময় ট্রুডো বলেন, ট্রাম্পের দৃষ্টি বিশেষভাবে কানাডার উত্তরাঞ্চলের দিকে, যেখানে বিপুল মূল্যবান খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার রয়েছে।
লিথিয়াম, গ্রাফাইট, নিকেল, কপার ও কোবাল্টসহ মূল্যবান খনিজ সম্পদের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার রয়েছে কানাডায়। দেশটি এসব গুরুত্বপূর্ণ খনিজ তার মিত্র দেশগুলোর চাহিদা পূরণে নিয়মিত সরবরাহ করে থাকে।
রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের আগেই কানাডিয়ান পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ সিদ্ধান্ত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছেন, তবুও কানাডা নিয়ে ট্রাম্পের বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য অব্যাহত রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন যে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে এবং প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে সেই রাজ্যের গভর্নর হওয়া উচিত। অন্যদিকে, শুল্ক ইস্যু নিয়ে কানাডার দুশ্চিন্তা এখনো কাটেনি। এই পরিস্থিতিতে টরন্টোয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও নিজ দল লেবার পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ট্রুডো।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) টরন্টোয় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মাদক কারবার রোধ, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো উপস্থিত ব্যবসায়ী ও নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ট্রাম্পের কানাডা অধিগ্রহণের হুমকি বাস্তবিকই গুরুতর। এটি শুধু কানাডার কাছ থেকে বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা নয়, বরং আরও গভীর উদ্দেশ্য রয়েছে।
ট্রুডো বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা আমাদের মূল্যবান খনিজ সম্পদ সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন। তারা বুঝতে পারছেন, এই সম্পদ তাদের জন্য লাভজনক হতে পারে। আর এই সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হিসেবে ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার চিন্তা করছেন।
এদিকে কানাডার শিল্পমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, আমেরিকান বন্ধুরা ভালোভাবেই জানেন যে, কানাডা শুধু তাদের অর্থনৈতিক ও জ্বালানি নিরাপত্তার জন্যই নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সতর্ক করে বলেন, যে কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত কোনো পক্ষের জন্যই ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না।
এসি//