রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রাণহানি রোধে একমত ট্রাম্প-পুতিন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। তাদের আলোচনায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে।
মার্কিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে প্রাণহানি রোধে সম্মত হয়েছেন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার জানিয়েছেন যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে তার “দীর্ঘ এবং অত্যন্ত ফলপ্রসূ” আলোচনা হয়েছে।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এ কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা ইউক্রেন সংকট, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি, জ্বালানি নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডলারের অবস্থানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।’
ট্রাম্প বলেন, তারা উভয়েই নিজ নিজ দেশের শক্তি এবং সেই “মহান সুবিধা” নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা ভবিষ্যতে তাদের একসাথে কাজ করার সম্ভাবনা তৈরি করে। তিনি আরও যোগ করেন, ‘তবে প্রথমেই আমরা উভয়েই একমত হয়েছি যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি বন্ধ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট পুতিন আমার প্রচারাভিযানের একটি শক্তিশালী নীতিবাক্য ব্যবহার করেছেন, ‘কমন সেন্স’। আমরা দুজনেই এই নীতিতে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একে অপরের দেশে সফর করা এবং ঘনিষ্ঠভাবে একসাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছি। আমরা আমাদের দলগুলিকে দ্রুত আলোচনা শুরু করতে দিতে সম্মত হয়েছি এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সাথে যোগাযোগ করে তাকে এই আলোচনার বিষয়ে অবহিত করার মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু করব, যা আমি এখনই করব।’
ট্রাম্প উল্লেখ করেন যে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ এবং তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে এই আলোচনার নেতৃত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আত্মবিশ্বাসের সাথে জানান যে তিনি বিশ্বাস করেন এই আলোচনা “সফল” হবে।
এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার পূর্বের দাবিটি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট থাকতেন, তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কখনোই শুরু হতো না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আর কোনো প্রাণহানি হওয়া উচিত নয়।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা শুরু করার পর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া— এই চারটি প্রদেশের কিছু অংশ রুশ বাহিনীর দখলে চলে গেছে।
এই চারটি প্রদেশের রাশিয়ার দখলকৃত অংশ মিলে ইউক্রেনের মোট ভূমির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ দখলে রয়েছে। যদিও যুদ্ধরত উভয় দেশই তাদের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা অনুযায়ী, এই যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা কয়েক লাখে পৌঁছেছে।
এসি//