ক্যাম্পাস

চমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাট-ডাউন ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক)  এমবিবিএস ও বিডি-এস ছাড়া অন্য কাউকে চিকিৎসকের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে কমপ্লিট শাট-ডাউনের ঘোষণা দিয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সম্মিলিত আহ্বানে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।  

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯০তম বারের মত হাইকোর্ট রায় পেছানোর মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতকে নাট্যমঞ্চের রঙ্গশালায় পরিণত করা হয়েছে। আমরা এই রায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানায়, দেশের সব মেডিকেল কলেজের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য চমেক হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ রায় ও ৫ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কমপ্লিট শাট-ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিক্যালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মোঃ তসলিম উদ্দীন জানান, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতিতে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের বাড়তি দায়িত্ব বণ্টন করে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’

ইন্টার্ন চিকিৎসক জুবায়ের হাসনাত বলেন, আমরা হাসপাতালের পরিচালককে কর্মবিরতির কথা জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশে আমরা সেটি পালন করছি।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো:

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইনের ভিত্তিতে এমবিবিএস/বিডি-এস ডিগ্রি ব্যতীত কেউ "ডাক্তার" পদবি ব্যবহার করতে পারবে না—এই আইন দ্রুত কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে, বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনো এমবিবিএস/বিডি-এস চিকিৎসক চিকিৎসা সেবা দিতে পারবেন না। 

এছাড়া, ২০১০ সালের পর সরকারি ম্যাটস থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন প্রদান বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করা জরুরি। এমবিবিএস/বিডি-এস চিকিৎসকদের বাইরে কেউ ওটিসি তালিকার বাইরে ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। পাশাপাশি, প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো কর্মক্ষেত্রে ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। 

স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট বিনিয়োগ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। দেশের স্বাস্থ্যসেবার শূন্যপদ পূরণে অবিলম্বে ৫০,০০০ চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে এবং অঞ্চলভিত্তিক স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে সম্মুখ স্তরের চিকিৎসকদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবছর ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ চিকিৎসক নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্যখাতে বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রম আরও দ্রুত ও কার্যকর করতে হবে। 

সমস্ত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এবং বেসরকারি ও সরকারি মাধ্যমিক মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের "স্যাকমো" পদবিতে সীমাবদ্ধ রেখে কেবলমাত্র মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।এছাড়া, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে "চিকিৎসক সুরক্ষা আইন" বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে তারা নিরাপদ পরিবেশে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।  

এসকে//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন