ইরানে হামলার আশঙ্কা, পরমাণু স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার

ইরানের সব পরমাণু স্থাপনায় জারি করা হয়েছে উচ্চ সতর্কতা। স্থাপনা ঘিরে বসানো হয়েছে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল যৌথভাবে হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা করছে তেহরান।
সম্ভাব্য হামলার বিষয়টি বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফকে মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে। ওইসব কর্মকর্তাদের মতে, ইসরাইল- যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে তেহরান তার পরমাণু স্থাপনাগুলোতে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসিয়েছে।
জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকেই ইরানে হামলার আশঙ্কা বেড়েছে। যেকোনো মুল্যে তেহরানের পরমাণু কর্মসুচি ঠেকাতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন।
আর নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, হামলা চালিয়ে ইরানের পরমাণু স্থাপনা ইসরাইল বা যুক্তরাষ্ট্র কেউই পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ সিনা আজোদি দ্য আই ফর ইরান পডকাস্টকে বলেন, ইরান ছয় মাসের মধ্যে তার পরমাণু বোমা বানানোর সক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে পারবে।
উদাহরণ দিয়ে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলিয়ট স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের এই লেকচারার জানান, আপনি যদি একটি গাড়ি বানাতে জানেন, আর তা যদি বারবার দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন, তবে তা কোন ব্যাপার না। আপনি খুব সহজেই তা নতুন করে বানাতে পারবেন কিংবা মেরামত করতে পারবেন। কেউ যদি ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে চায়, তবে তাদের এই বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বারবার অভিযোগের বিষয়ে তেহরান জানিয়েছে, তারা কোন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর চেষ্টা করছে না । তবে ওয়াশিংটন ও তেল আবিব তা মানতে নারাজ। যুক্তরাষ্ট্রের মতে, তেহরানের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ ইউরেনিয়াম আছে। দেশটি চাইলেই পরমাণু অস্ত্র বানাতে পারবে। আর গেলো সপ্তাহে গোয়েন্দাদের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ইরানি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বর্তমানে অনেকটা ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। এই সুযোগ নিয়ে ইরানে হামলা চালাতে চায় ইসরাইল।
এ বিষয়ে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার আজোদি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসুচিতে হামলা হলে, তা যদি পুরোপুরি ধ্বংস না হয়, তবে তেহরান নিজেকে রক্ষার জন্য পরমাণু অস্ত্রের দিকে আরও বেশি করে মনোযোগ দিবে। অথাৎ ইরান তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অবশ্যই পরমাণু বোমা বানাবে।
তবে টেলিগ্রাফ পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইরানে হামলা সময়, ইসরাইলকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ইসরাইলি যুদ্ধবিমান গুলোকে অন্তত ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে। পাশপাশি মাঝ আকাশে জ্বালানি নেয়া ও ইরানে রাশিয়ার তৈরি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
এনএস/