দেশজুড়ে

বাবার নির্মমতা, মায়ের নিষ্ঠুরতার শিকার ছোট্ট লামিয়া

শুধু মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে আসার অপরাধে ৯ বছরের ছোট্ট লামিয়াকে গাছে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে এবং গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে তার বাবা-মা। শিশুটি বর্তমানে বরগুনার তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (০৫ মার্চ) বিকেলে বরগুনার তালতলী উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের সওদাগরপাড়া গ্রামে। 

জানা গেছে, সওদাগরপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামান সিকদারের মেয়ে তালতলী শহরের আয়শা সিদ্দিকা মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। সকালে ৯ বছরের শিশু লামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকদের না বলে বাড়ি চলে যায়। দুপুরে শিক্ষকরা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার কথা তার বাবা কামরুজ্জামানকে জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাবা ও মা মিলে নিজের সন্তানকে অমানসিক নির্যাতন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয়ে পুলিশ জানায়, বাবা কামরুজ্জামান মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পেটান, আর মা আসমা বেগম গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরে ছ্যাঁকা দেন। এতে শিশুটির শরীরের কয়েকটি স্থানে গুরুতর ক্ষত সৃষ্টি হয়। স্থানীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে সাংবাদিক নাঈম ইসলাম ও শাইরাজ শিশুটিকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

মা আসমা বেগম নিজেও স্বীকার করেছেন, আমার স্বামী প্রায়ই মেয়েকে মারধর করে। আজকে মারতে শুরু করলে আমিও রাগের মাথায় খুন্তির ছ্যাঁকা দিই। এটা আমার ভুল হয়েছে, বুঝতে পারিনি এমন হবে।

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘শিশুটির শরীরের দুটি স্থানে গরম খুন্তির ছ্যাঁকার দাগ রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’

এ ঘটনায় তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে ছালমা শিশুটির চিকিৎসা ও পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। পাশাপাশি তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন, শিশুটির বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন দমন আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে।

তালতলী থানার ওসি মো. শাহজালাল জানান, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন